সিলেটে ভারী বৃষ্টিপাত মানে কেঁদে ওঠে দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের পুণ্যভূমি সিলেট। বৃষ্টির কবলে ফুটপাতে জমে থাকা ময়লার সাথে ভেসে বেড়ায় নগরবাসীর নিয়মিত দুর্দশা, থমকে যায় নগরজীবন। হাঁটু সমান পানিতে বিপর্যস্ত ডুবন্ত এলাকার পথচারী ও যানবাহন।
সিলেটে গত ১২ ঘণ্টার অব্যাহত বৃষ্টিপাতে নগরীর উপশহর, কাজলশাহ, আম্বরখানা—মেজর টিলা ও খাসদবিরসহ অনেক এলাকায়ই পুরোপুরি হয়ে পড়ে জলমগ্ন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, প্রায় প্রতিবছরই এমনটা নিয়তি তাদের।
স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, ‘যত সময় যাচ্ছে দিনদিন পানির অবস্থা ভোগান্তির দিকে যাচ্ছে। বাসার নিচতলা পর্যন্ত পানি উঠে গেছে। মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছে।’
শুধু স্থানীয় বাসিন্দা নয় স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষই এই ভোগান্তির বৃত্তে ঘুরপাক খেতে হয় তাদের। যদিও নগর কর্তৃপক্ষ বলছে, অতিবৃষ্টির পাশাপাশি জল নিষ্কাশনের দুর্বল ব্যবস্থাপনাও এই দুর্ভোগের বড় কারণ। আর আবহাওয়া অফিস বলছে আগামী ২৪ ঘণ্টা থাকতে পারে এমন বৃষ্টিপাত।
সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসাইন বলেন, ‘আগামী ৭২ ঘণ্টাব্যাপী আমাদের যে পূর্বাভাস আছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে দেয়া, সেটিতে সিলেট অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে অর্থাৎ ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস অব্যাহত আছে। আমরা এখন যে বৃষ্টি দেখছি আগামীকালও একই অবস্থা থাকতে পারে। বেশি পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা নেই।’
সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নুর আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের বৃষ্টির প্যাটার্ন পরিবর্তন হয়ে গেছে। আসাম, চেরাপুঞ্জি, সিলেটের বৃষ্টি একত্র হয়ে পানিটা নদীতে যায়। নদীটা প্রতিবছর ড্রেজিং হচ্ছে না। নদীর পানি যখনই শহরের দিকে চলে আসে তখনই জলাবদ্ধতা হয়।’
এদিকে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে সিলেটের বিয়ানীবাজার পৌরশহরে জলাবদ্ধতার মধ্যেই সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন এক শিক্ষার্থী, পরে তাকে হাসপাতালে নেয়ার পর মৃত্যু হয় তার । একই উপজেলায় ঘটে পাহাড় ধ্বসের ঘটনাও । তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি বলে জানায় উপজেলা প্রশাসন। এর পরেই উপজেলা জুড়ে জারি করা হয় সতর্কবার্তা ।