নওগাঁ শহরের গোস্তহাটির মোড়ের পাশের ‘চামড়া পট্টি’। পবিত্র ঈদুল আজহা ঘিরে চামড়া ব্যবসায়ীদের হাঁকডাকে মুখর হওয়ার কথা থাকলেও এবার নেই কোনো প্রস্তুতি।
চলতি বছর লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া পাঁচ টাকা ও ছাগলের চামড়া দুই টাকা বাড়িয়েছে সরকার। তবে সরকার নির্ধারিত এই দামে খুশি নয় ব্যবসায়ীরা। জানান, জেলায় ছোট থেকে বড় ১৫০ জন চামড়া ব্যবসায়ী থাকলেও কয়েকজন ট্যানারি মালিকের কাছে জিম্মি প্রায় সবাই। এছাড়া ৫০ কেজির লবণের বস্তায় ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়ায় লাভ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।
চামড়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘বিগত কয়েক বছরে ঢাকায় আমাদের যেসব টাকা পড়ে আছে সে টাকাগুলো এখনও পাচ্ছি না। তবে কিছু কিছু পাই, মাঝেমধ্যে পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকা পাঠায়। এ টাকা দিয়ে আসলে কিছু হয় না।’
অন্য একজন বলেন, ‘চামড়া কিনে ঢাকায় পাঠানোর পরে টাকা না পাওয়াতে বিভিন্ন সমস্যায় পড়ে ব্যবসাটা এখন প্রায় বন্ধ।’
আগে ২৫টি গুদাম থাকলেও এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র তিনটিতে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো গেলে এই শিল্প আরও এগিয়ে যাবে। গেল পাঁচ বছরে ট্যানারি মালিকদের কাছে ব্যবসায়ীদের প্রায় পাঁচ কোটি টাকা বকেয়া জমেছে বলেও দাবি করেন তারা।
নওগাঁ জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সভাপতি মো. মোমতাজ হোসেন বলেন, ‘এটার সঠিক ব্যবহার যেন হয়। আমরা যেন সঠিকভাবে চামড়া কিনতে পারি, লবণ দিতে পারি, ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করতে পারি এবং আমরা যেন টাকা পাই। ব্যবসায়ীরা যদি প্রতিবছর এভাবে লোকসান করতে থাকে তাহলে তো চামড়া সংরক্ষণ করার লোক থাকবে না।’
এরইমধ্যে জেলার ছয়টি মাদ্রাসায় চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের বিষয়ে জানানো হয়েছে। এছাড়াও বিনামূল্যে লবণ সরবরাহের বিষয়ে তদারকির কথাও জানান জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আউয়াল।
তিনি বলেন, ‘চামড়া সংগ্রহ করতে গিয়ে যখন দেরি হয়ে যায় তখন এর মাঝের সময়ে চামড়াগুলোর পচন ধরে যায়। ইনশাআল্লাহ এটা আমাদের হবে না। প্রয়োজনে আমরা ঈদের আগে আবারও জনগণকে সচেতন করার জন্য মাইকিং করবো পাশাপাশি বিনামূল্যে যে লবণটা সরবরাহ করা হবে সেটা যেন সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয় সে বিষয়টাও নিশ্চিত করবো।’
এ বছর দুই লাখ চামড়া প্রস্তুতের আশা ব্যবসায়ীদের। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে বকেয়া পরিশোধসহ সরকারের নজরদারি বাড়ানোর দাবি সংশ্লিষ্টদের।