‘ইউক্রেনে নিজেদের লক্ষ্য থেকে কোনো অবস্থাতেই পিছু হটবে না রাশিয়া’

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন
বিদেশে এখন
0

তিন বছরের যুদ্ধে আবারও সবচেয়ে বড় আগ্রাসী হামলার শিকার ইউক্রেন। একরাতে ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ৫৫০টি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে রাশিয়া। এর আগে, ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানান, ইউক্রেনে নিজেদের লক্ষ্য থেকে কোনো অবস্থাতেই পিছু হটবে না রাশিয়া। অন্যদিকে, আলাপে কোনো অগ্রগতি নেই জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, পুতিনকে নিয়ে তিনি হতাশ। সবমিলিয়ে নিভতে বসেছে যুদ্ধ বন্ধে আশার আলো।

আবারও রাশিয়ার রাতভর হামলা। আরো একটি রাত যুদ্ধবিমানের আওয়াজ, মুহুর্মুহু বিস্ফোরণ আর সর্বস্ব হারানো মানুষের আহাজারিতে কাটলো ইউক্রেনে।

আজ (শুক্রবার, ৪ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রুশ বিমান হামলার ভয়াবহতার দৃশ্য প্রকাশ করে ইউক্রেনের জরুরি সেবা দফতর। দেশটির ভূখণ্ডে এক রাতে আরো ৫৩৯টি ড্রোন আর ১১টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয় বলে জানায় প্রশাসন।

রাজধানীজুড়ে রেলওয়ে অবকাঠামো, যানবাহন, বাড়িঘর লক্ষ্য করে হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। ৩০ লাখ বাসিন্দার শহর কিয়েভে গেলো কয়েক সপ্তাহ ধরেই আক্রমণের পরিধি বাড়াচ্ছে রুশ বাহিনী।

এমন পরিস্থিতিতেই বৃহস্পতিবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইউক্রেনে নিজেদের লক্ষ্য থেকে কোনো অবস্থাতেই পিছু হটবে না রাশিয়া, স্পষ্ট জানান পুতিন। সংঘাতের মূল কারণগুলো নির্মূলের আগ পর্যন্ত হামলা চলবে বলেও জানায় ক্রেমলিন। প্রতিক্রিয়ায় একরাশ হতাশা জানিয়ে ট্রাম্প স্বীকার করেন, কোনো লাভই হয়নি ফোনালাপে, নেই শান্তি প্রচেষ্টায় কোনো অগ্রগতি।

রাশিয়ার ক্রেমলিনের সহযোগী ইউরি উশাকোভ বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও সামরিক অভিযানে দ্রুত ইতি টানার বিষয়টি উত্থাপন করেছেন। ভ্লাদিমির পুতিন তার পক্ষ থেকে জানিয়েছেন যে আমরা রাজনৈতিক প্রচেষ্টা এবং আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের প্রেসিডেন্ট আরো জানিয়েছেন যে রাশিয়া যেসব লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে, সেগুলো অর্জন করে তবেই হাল ছাড়বে। চলমান যুদ্ধে মূল কারণগুলো নির্মূল করা হবে। এর আগে রাশিয়া পিছু হটবে না।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাথে আজকের কথোপকথনের পর আমি ভীষণ হতাশ। কারণ আমার মনে হয় না পুতিন নিজের মধ্যে আছেন। আমি খুব হতাশ। আমার মনে হয় না তার থামার কোনো ইচ্ছে আছে। এটা খুব খারাপ।’

এদিকে, মার্কিন অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যুদ্ধের চতুর্থ বছরে রাশিয়ার আগ্রাসন আরো বাড়বে বলে শঙ্কায় ইউক্রেন। অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘মার্কিন সামরিক সহায়তা অব্যাহত থাকছে কি না, তার ওপর আমাদের অনেক কিছু নির্ভর করে। আমরা ইউরোপের সহায়তাও পাচ্ছি। কিন্তু এমন অনেক সামরিক সরঞ্জামই আছে যেগুলো ইউরোপের কাছে এই মুহূর্তে নেই। যেমন প্যাট্রিয়ট মিসাইল সিস্টেম। এটা গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি এ বিষয়ে শিগগিরই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলতে পারবো।’

এদিকে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অবসান চাইলেও মস্কোকে পরাজিত দেখতে চায় না চীন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক প্রধান কাজা কালাসের সঙ্গে চার ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এ কথা জানান চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই।

সেজু