গাজা পুনর্গঠনে ৫ বছর মেয়াদী পরিকল্পনায় একমত আরব রাষ্ট্র

মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
0

পাঁচ বছরে গাজা পুনর্গঠনে মিশরের পরিকল্পনার সঙ্গে একমত হয়েছে আরব রাষ্ট্রগুলো। হামাস প্রস্তাবটিকে স্বাগত জানালেও কড়া নিন্দা জানিয়েছে ইসরাইল। তীব্র সমালোচনা করেছে হোয়াইট হাউজও। অন্যদিকে প্রস্তাবটিকে স্বাগত জানিয়ে দ্রুত যুদ্ধবিরতির আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।

ট্রাম্পের গাজা দখলের প্রস্তাব রীতিমতো ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলে দিলেন আরব নেতারা। বিকল্প হিসেবে মিশরের পাঁচ হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ে ৫ বছরে গাজা উপত্যকা পুনর্গঠনের পরিকল্পনাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তারা। গাজার অভ্যন্তরে নিরাপদ অঞ্চলে ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তর করে পুনর্গঠনের কাজ করা হবে। অন্যদিকে, ট্রাম্প গাজা দখল করে ফিলিস্তিনিদের অন্য দেশে পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে আরব বিশ্ব।

মিশরের রাজধানী কায়রোতে আরব লীগের নেতাদের জরুরি শীর্ষ সম্মেলনে গাজা পুনর্গঠনের পরিকল্পনা সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। মিশরের পরিকল্পনাটিকে আরব পরিকল্পনা বলেও উল্লেখ করেন আরব লীগের মহাসচিব আহমেদ আবুল ঘেইত। সমাপনী বক্তব্যে মিশরের প্রেসিডেন্ট বলেন, এই পরিকল্পনার অন্যতম লক্ষ্য ট্রাম্পের 'মধ্যপ্রাচ্য রিভেরা' প্রস্তাবের বিরুদ্ধে লড়াই করা।

মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি বলেন, 'গাজার পুনর্গঠন ও উন্নয়ন পরিকল্পনার খসড়া আরব শীর্ষ সম্মেলনে এরইমধ্যে গৃহিত হয়েছে। সমাপনী বিবৃতিতে গাজার পুনর্গঠন এবং এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সবাইকে সহায়তার হাত বাড়ানোর আহ্বান জানানো হলো।'

তিনটি ধাপের এই পরিকল্পনার বিস্তারিত ৯১ পৃষ্ঠা প্রস্তাবে নকশাসহ তুলে ধরে মিশর। প্রথম পর্যায়ে ছয় মাসের জন্য গাজার অভ্যন্তরে ফিলিস্তিনিদের নিরাপদ অঞ্চলে স্থানান্তরের জন্য একটি কমিটি এরইমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে। গাজার শাসনভার স্বাধীন ও স্বতন্ত্রভাবে গঠিত একটি প্রশাসনিক কমিটির হাতে থাকবে। এতে অর্থয়ন করবে মিশর, আরব রাষ্ট্রসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা।

গাজা নিয়ে পাঁচ বছরের এই পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছে হামাস। তবে কয়েকটি আরব রাষ্ট্র হামাসকে সম্পূর্ণরূপে ভেঙে ফেলার আহ্বান জানালেও, অনেকে বলেছে সেটি ফিলিস্তিনিদের ওপর ছেড়ে দেয়া উচিত। এদিকে, হামাস জানিয়েছে, এই মুহূর্তে গাজার শাসনভার তারা চায় না। তবে সংগঠনটিকে নিরস্ত্রীকরণের চেষ্টা তারা মেনে নেবে না।

অন্যদিকে, ইসরাইলের অভিযোগ, মিশরের প্রস্তাবে হামাসের ভূমিকা কী হবে তা স্পষ্ট করা হয়নি। ইসরাইলের সঙ্গে সংঘাত নিরসনে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে তাও নেই এই পরিকল্পনায়। এদিকে, ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মিশরের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ট্রাম্পের সহযোগিতা চেয়েছেন। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে শিগগিরই যুদ্ধবিরতির আলোচনায় বসার আহ্বান জানায় জাতিসংঘ।

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, 'গাজার পুর্নগঠনে আরব রাষ্ট্রের পরিকল্পনাকে স্বাগত এবং দৃঢ়ভাবে সমর্থন জানিয়েছে জাতিসংঘ। শীর্ষ সম্মেলনে সবকিছু স্পষ্টভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। এই প্রচেষ্টায় সম্পূর্ণ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছে জাতিসংঘ।'

ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেন, 'গাজা উপত্যকা পুর্নগঠনে পপরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। এই প্রস্তাবে ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূখণ্ড ছেড়ে যেতে হবে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এই পরিব=কল্পনায় সহায়তা করার আহ্বান জানাচ্ছি। এর চেয়ে ভালো কোনো পরিকল্পনা এই মুহূর্তে নেই।'

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, মিশরের এই পরিকল্পনা বাস্তবসম্মত নয়। উপত্যকাটি এখন বসবাসের অযোগ্য। সেক্ষেত্রে উপত্যকাটিকে নতুন করে সাজানো ট্রাম্পের পরিকল্পনা তুলনামূলক বাস্তবসম্মত ও বেশি গ্রহণযোগ্য বলেও দাবি করা হয়।

এসএস