ফেসবুকে পোস্টে আবিদুল লেখেন, ‘নিজের রাজনৈতিক আদর্শের সঙ্গে আপোষ না করায়, ২০১৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকে আমার প্রতিটি দিন কেটেছে সংগ্রামে। শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট শাসনামলের অন্ধকার সময়ে, যখন গোটা ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের দখলদারিত্ব ও অত্যাচারের যাঁতাকলে পিষ্ট, তখন এ সাধারণ আমরা কয়েকজন তরুণ, চোখে বারুদ নিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম প্রতিরোধের পথে। হলে থাকার সৌভাগ্যটুকুও কখনও হয়ে ওঠেনি। গণরুম–গেস্টরুমের নির্যাতনের বিরুদ্ধে রাজপথে গলা ছেড়ে স্লোগান তুলেছি।’
জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিষয়ে তিনি লেখেন, ‘সে দৈনন্দিন লড়াইয়ের গল্পে একদিন আসে জুলাই। জুলাইয়ের প্রতিটি দিন ছিল আগুনঝরা। রংপুরের শহীদ আবু সাঈদ আর চট্টগ্রামে আমার প্রাণের সংগঠন ছাত্রদলের শহিদ ওয়াসিমের মতো অকুতোভয় যোদ্ধাদের দেখানো পথে আমরাও ঢাকার পথে পথে, শহরের মোড়ে মোড়ে নির্ভীক চিত্তে বুক পেতে বুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে গিয়েছি।’
ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদল মনোনীত ভিপি পদপ্রার্থী হিসেবে মনোনীত হওয়ার বিষয়ে আবিদুল ইসলাম খান লেখেন, ‘গত ১৯ আগস্ট দিন থেকে রাত পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের অভ্যন্তরে দায়িত্বশীল নেতাদের ভোটাভুটিতে সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ডাকসু নির্বাচন ২০২৫-এর ছাত্রদল মনোনীত ভিপি পদপ্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়েছিলাম। ২০ আগস্ট সকালে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে নাম ঘোষণা হলে স্তব্ধ ছিলাম, দায়িত্বের ভারে আতঙ্কিত ছিলাম। শুরু হয়েছিল জীবনের এক ঐতিহাসিক লড়াই।’
আরও পড়ুন:
তিনি লেখেন, ‘আমি কৃতজ্ঞতা জানাই আমার প্রাণের সংগঠন ছাত্রদলের প্রতি। খুব অল্প সময়ের এ ক্যাম্পেইনে আপনারা আমার ওপর বিশ্বাস রেখে দিন-রাত এক করে কাজ করেছেন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, টিএসসি ও বিভাগভিত্তিক ক্লাব, জেলা-উপজেলাভিত্তিক সংগঠন, বাস কমিটি ও সকল শিক্ষক ও কর্মচারিদের মধ্যে যারা আমাকে ভালোবেসেছেন, সাহায্য করেছেন, নির্বাচন আয়োজনে যুক্ত ছিলেন আমি মনের গভীর থেকে তাদের কৃতজ্ঞতা জানাই। আপনাদের কাছে আমি চির ঋণী।’
তার সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে আবিদুল লেখেন, ‘ক্যাম্পেইন চলাকালে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ আমাকে সমর্থন জানিয়েছেন, অনেকে ক্যাম্পাসে এসে দেখা করতে চেয়েছেন, আমি হয়তো নির্বাচনী ব্যস্ততায় আপনাদের জন্য খুব একটা সময় বের করতে পারিনি। আমাকে আপনারা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন, আপনাদের এ ভালোবাসায় আমি ঋণী।’
সংগ্রাম শেষ হয়নি বলে জানান তিনি। লেখেন, ‘অসংখ্য প্রতিকূলতায় আপনাদের দু’আ আমার পথচলার পাথেয়। তবে মনে রাখবেন, সংগ্রাম শেষ হয়নি। অনৈতিকতার বিরুদ্ধে নৈতিকতার সংগ্রাম জারি আছে এবং থাকবে। আমাদের জীবনে কোনো হার-জিত নেই, সার্থকতা শুধুই দায়িত্ব পালনে।’
সবশেষে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘আমার পথ’ কবিতার লাইন দিয়ে পোস্ট শেষ করেন আবিদুল ইসলাম খান।
লেখেন, ‘যে-পথ আমার সত্যের বিরোধী, সে-পথ ছাড়া আর কোনো পথই আমার বিপথ নয়! -কাজী নজরুল ইসলাম।’