শ্রমিক অসন্তোষের জেরে গাজীপুরে সড়ক মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ এখন নিত্যদিনের চিত্র। বুধবারও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কসহ জেলার বেশ কয়েকটি স্থানে সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটেছে।
গাজীপুরের সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নারী সহকর্মীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সকাল ৮টা থেকে মহাসড়কে বিক্ষুব্ধ পোশাক শ্রমিকরা। আজ (বুধবার, ১২ মার্চ) সকালে কাজে যোগ দিতে আসার পথে অটোরিকশা ধাক্কায় গুরুতর আহত হন জান্নাতুল ফেরদৌস তামান্না নামের এক শ্রমিক। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান সেই শ্রমিক।
এই সংবাদ কারখানায় পৌঁছালে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা কর্মবিরতি দিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে। এসময় ভাংচুর করা হয় বেশ কয়েকটি যানবাহনে। এসময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচল বন্ধ ও নিহত শ্রমিকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি জানান।
গার্মেন্টস শ্রমিকদের একজন বলেন, ‘অটোর গতি আর গাড়ির গতি তো এক না। এসব অটোকে বাঁচাতে বড় গাড়িগুলো দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়।’
অবরোধের ফলে দীর্ঘ যানজটে আটকা পড়ে দুর্ভোগে পড়েন অফিসগামী যাত্রী ও পরিবহন চালকরা।
যাত্রীদের একজন বলেন, ‘এই ব্যাপারে সরকারিভাবে একটা জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। প্রতিদিন এই ভোগান্তি আসলে সহ্য করার মতো না।’
চালকদের একজন বলেন, ‘আমরা চাই রাস্তা সবসময় ক্লিয়ার থাকুক, ভালোভাবে যাওয়া আসা করতে পারবো।’
বেলা ১২টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আশ্বাসে প্রায় ৪ ঘণ্টা পর শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নিলে বাধ সাধেন পরিবহন শ্রমিকরা। মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচল বন্ধের দাবিতে আবারও রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে যৌথবাহিনীর সদস্যরা ধাওয়া দিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিলে যানচলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়।
পুলিশ জানায়, নিহত পোশাক শ্রমিকের ক্ষতিপূরণসহ সকল দাবি মেনে নেয়ার বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছেছে শ্রমিক ও মালিকপক্ষ।
গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মোজাম্মেল হোসেন রেজা বলেন, ‘এই দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা মালিক পক্ষের কাছে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেছে। আলোচনার মাধ্যমে মালিকপক্ষ এই দাবিগুলো মেনে নিয়েছে। এরপরও উচ্ছৃঙ্খল কিছু মানুষ রাস্তা আটকে রেখেছিল, তাদেরকে আইন প্রয়োগ করে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।’
এদিকে বকেয়া বেতন ভাতার দাবিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক, মাওনা-কালিয়াকৈর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন পোশাক শ্রমিকরা।