চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদের মাঝে ঢাকা থেকে আসা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ, প্রাথমিক চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হয়। নারী, শিশু ও প্রবীণরা বিনামূল্যে এ সেবা গ্রহণ করেন।
রোগীদের একজন বলেন, ‘আমার ছেলে-মেয়েদের জন্য ওষুধ নিয়েছি। এছাড়া আমার নিজের সমস্যা ছিল সেটার জন্য ফ্রিতে এখান থেকে ওষুধ নিতে পেরে ভালো লাগছে।’
আরেকজন বলেন, ‘স্বপ্নালোড়ন সংগঠন থেকে আমাদের গ্রামে যে সহযোগিতা দিচ্ছে তার জন্য আমরা গর্বিত। এর ফলে আমাদের গ্রামের অসহায় মানুষদের অনেক উপকার হচ্ছে। আমার এলার্জি সমস্যা আছে তার জন্য এখানে এসেছি।’
আয়োজক সংগঠন স্বপ্নালোড়ন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের পাশে দাঁড়ানোই তাদের মূল লক্ষ্য। এ ধরনের কার্যক্রম তাদের সামাজিক দায়বদ্ধতারই অংশ। ভবিষ্যতেও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে থাকা সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মাঝে উন্নত চিকিৎসাসেবা ও এমন মানবিক উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও তারা জানান।
চিকিৎসাসেবা ক্যাম্পে স্বপ্নালোড়ন বাংলাদেশের স্বেচ্ছাসেবক, চিকিৎসক ও সমাজসেবকরা অংশগ্রহণ করেন। এলাকাবাসী সংগঠনটির এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে নিয়মিত আয়োজনের আহ্বান জানান।
স্বপ্নালোড়ন বাংলাদেশের স্বেচ্ছাসেবক শরিফুল ইসলাম ফারুকী বলেন, ‘সারাদেশে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জায়গায় আমরা এ আয়োজন করে থাকি। এর মধ্যে আমাদের সবচেয়ে বড় কার্যক্রম হচ্ছে ঢাকার ইস্কাটন ও মিরপুরে প্রত্যেক সপ্তাহে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য স্কুল কর্মশালা। এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে আমাদের এ ফ্রি মেডিকেল সেবা কয়েক বছর ধরে আয়োজন করা হচ্ছে।’
স্বপ্নালোড়ন বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারিয়া জান্নাত স্নিগ্ধা বলেন, ‘আমি ২০১৮ সালে থেকে এখন পর্যন্ত সংগঠনের সাথে আছি। এ নিয়ে ৮ম বারের মতো আমাদের এ ফ্রি মেডিকেল সেবার আয়োজনে আমি এসেছি। ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে আমরা প্রতিবারই ৫০০ থেকে ৬০০ রোগীকে সেবা দিয়ে থাকি। পাশাপাশি বিনামূল্যে ওষুধও দিয়ে থাকি আমরা।’
চিকিৎসাসেবা কার্যক্রমে ডা. আব্দুল্লাহ খান, ডা. আজহারুল ইসলাম, ডা. সাব্বির রহমান, ডা. আনিসুর রহমান ও ডা. রাফিসহ ১০ জনের অধিক চিকিৎসক চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন।
স্বপ্নালোড়ন বাংলাদেশের স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসক ডা. আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের সেবা দিতে পেরে আমার ভালো লাগছে। আমি আশা করবো ভবিষ্যতে তাদের এ কার্যক্রম চলমান থাকে।’
স্বপ্নালোড়ন বাংলাদেশের স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসক ডা. আব্দুল্লাহ খান বলেন, ‘গতবার ২০০ রোগীকে দাঁতের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এবারো তাই হবে। এখানে তাদের যতটুকু সম্ভব ফিলিং থেকে শুরু করে লেজার ফিলিংও করে দেয়া হয়। এগুলো নিজেদের অর্থায়নে করে থাকি। যেহেতু দাঁতের চিকিৎসা ব্যয়বহুল, এছাড়া প্রান্তিক পর্যায়ে লোকজন সেভাবে চিকিৎসা করাতে পারে না তাই আমরা চেষ্টা করছি তাদের বিনামূল্যে সেবা দেয়ার।’
এছাড়াও চিকিৎসাসেবা কার্যক্রমটিতে উপস্থিত ছিলেন স্বপ্নালোড়ন বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জামান আশরাফ, আব্দুল্লাহ আল মামুন পলাশ, ইয়াসমিন সুমি, জিনিয়া জাফরিন নিদ্রা, অমিরুল ইসলাম পিয়াস, তমাল ফরাজী, জুবায়ের আহমেদ প্রমুখ।