বাজার সৃষ্টি হলে বাঁশ হতে পারে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খাত

বাজার সৃষ্টি হলে বাঁশ হতে পারে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খাত
অর্থনীতি
0

রাঙামাটিতে বাঁশের তৈরি ফার্নিচার স্থানীয়ভাবে চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে জেলার বাইরেও। হালকা, টেকসই, পরিববেশবান্ধব ও মূল্যসাশ্রয়ী হওয়ায় এই ফার্নিচারের চাহিদা দিনদিন বেড়ে চলছে। তবে বাঁশের প্রাচুর্যতা থাকলেও নির্মাণ সামগ্রী হিসেবে ব্যবহার ছাড়া বিকল্প উপযোগী পণ্য তৈরির ব্যবস্থা গড়ে না ওঠায় এর আর্থিক মূল্য বাড়ানো যাচ্ছে না। বিশেষ করে বাঁশের আসবাবপত্র, শো-পিস ও গৃহস্থালি পণ্যের ব্যাপক বাণিজ্যিক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও পরিবেশবান্ধব এ পণ্য উৎপাদনে নেই উদ্যোগ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আসবাবপত্রসহ সৌখিন পণ্য উৎপাদন ও দেশ-বিদেশে এর বাজার সৃষ্টি করা গেলে এটি হয়ে উঠবে পাহাড়ের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খাত। তবে স্বল্প পরিসরে আগ্রহীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিসিক।

রাঙামাটি স্টেডিয়ামের সামনে বিপণন প্রদর্শনী কেন্দ্রটিতে থরে থরে সাজানো আছে বাঁশের তৈরি হরেক রকম পণ্য। কোনোটি আসবাবপত্র আবার কোনোটি সৌখিন শোপিস পণ্য। এই যেমন ডাইনিং টেবিল-চেয়ার, আলমিরা যেমন আছে। আছে টেবিলে সাজিয়ে রাখার কলমদানিও। সরাসরি কেনার পাশাপাশি অনলাইনে পছন্দের পণ্য কেনার সুযোগ আছে। এসব পণ্য মিলছে ১৫০ টাকা থেকে ৩৫ হাজার টাকায়। কেমিক্যাল মিশ্রণসহ নানান প্রক্রিয়া শেষে স্থানীয় ভুদুম বাঁশ দিয়ে তৈরি হচ্ছে এসব পণ্য। ফলে ওজনে হালকা, টেকসই, সাশ্রয়ী দাম আর পরিবেশ বান্ধব এসব পণ্যের দিনদিন বাড়ছে চাহিদা। মাসে বিক্রি হচ্ছে ৫০ হাজার থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত।

একজন কারিগর বলেন, 'আমাদের বাঁশগুলো প্রথমে কেমিক্যালে ভেজাতে হয়। ১০ থেকে ১৫ দিন ভেজানোর পর পাঁচদিন শুকাতে হয়। এরপর ইচ্ছা করলে সবকিছু বানানো যায়।'

পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঁশ শিল্পের প্রসার ও কর্মসংস্থান বাড়াতে রাঙামাটির স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আশিকা ২০০৮ সাল থেকে বাণিজ্যিকভাবে বাঁশের ফার্নিচার তৈরি শুরু করে। পাহাড়ে এই শিল্পকে ছাড়িয়ে দিতে উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ, কারিগরি ও ঋণ সহযোগিতা দিতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা চান উদ্যোক্তা।

রাঙামাটি আশিকার নির্বাহী পরিচালক বিপ্লব চাকমা বলেন 'সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ, ঋণ সহযোগিতা, কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করলে এই পার্বত্য চট্টগ্রামে অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক ধরনের অবদান রাখতে পারবে।'

বাঁশের নতুন নতুন পণ্য তৈরি করে এর মূল্য কয়েকগুণ বৃদ্ধির সুযোগসহ পার্বত্যাঞ্চলে বাঁশজাত শিল্প গড়ে তুলে বিপ্লব তৈরি করা সম্ভব। এজন্য আগ্রহীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহযোগিতা দেয়ার কথা জানালেন রাঙামাটি বিসিকের কর্মকর্তা।

রাঙামাটি বিসিকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, 'বাঁশজাত নতুন নতুন পণ্য তৈরি করা যেত। এবং যদি বাঁশের ভ্যালুএডিশন করা যেত, নতুন একটা প্রকল্প নিলে হয়তো এখানে তিন পার্বত্য জেলায় বাঁশ যে পরিমাণে উৎপন্ন হয় এর একটা শিল্পের তৈরি করার মাধ্যমে এখানে একটা বিপ্লব তৈরি করা সম্ভব।'

এসএস