যুগ পেরোলেও শেষ হয়নি মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণ

অধরাই থাকছে ব্লু ইকোনমির স্বপ্ন

চট্টগ্রাম
এখন জনপদে , শিক্ষা
অর্থনীতি
0

দক্ষ জনবলের অভাব আর প্রযুক্তিগত দুর্বলতায় থমকে আছে দেশে বিশাল সমুদ্রসীমার সম্পদ আহরণ। প্রতিযোগী দেশগুলো অনেক দূর এগিয়ে গেলেও, এনিয়ে উদাসীন দেশের নীতি নির্ধারকরা। এদিকে দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে এক যুগ আগে চট্টগ্রামে শুরু হয় একমাত্র মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ। কিন্তু অজানা কারণে এখনও শেষ হয়নি নির্মাণ। ফলে অনেকটা অধরাই থেকে যাচ্ছে ব্লু ইকোনমির স্বপ্ন।

১ লাখ ১৮ হাজার বর্গকিলোমিটার সমুদ্র সীমা। সাথে ২শ' নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল। তবে ব্লু ইকোনমির বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের সে সম্ভাবনা নিংড়ে নেয়ার কাজ এখনো শুরু করতে পারেনি বাংলাদেশ। যার প্রধান বাধা দক্ষ জনশক্তি ও প্রযুক্তিগত দুর্বলতা।

২০১৩ সালে দক্ষিণ এশিয়ার তৃতীয় ও বিশ্বের ১২তম মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করে সরকার। বাকলিয়ার হামিদচরে ১০৬ একর জায়গায় ৩৮টি ভবন নির্মাণে ১ হাজার ১৮৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।

তবে এক যুগ পরও শেষ হয়নি এর কাজ। মাঝে অর্থনৈতিক ভঙ্গুর পরিস্থিতিতে ১ হাজার ১৭ কোটি টাকায় ১৯টি ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবে, অন্তর্বর্তী সরকার আসার পর কিছুটা বেড়েছে কাজের গতি।

বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির প্রকল্প পরিচালক কমোডর মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, আমাদের কাজের অগ্রগতি অনুযায়ী, অদ্যবধি প্রায় ৪০ শতাংশ ভৌত অগ্রগতি হয়েছে। আমাদের আর্থিক অগ্রগতি ৩০ শতাংশ। যেহেতু আমাদের কাজ এখন দ্রুত এগিয়ে চলছে। সামনে আমাদের আর্থিক ও ভৌত অগ্রগতি দ্রুত করা সম্ভব হবে ইনশাআল্লাহ।’

ক্যাম্পাসের জন্য নির্ধারিত জায়গায় এখন তুমুল ব্যস্ততা। এখানে গড়ে উঠবে ছয়তলা দুটি একাডেমিক ভবন। যেখানে থাকবে ৫২টি শ্রেণিকক্ষ। পাশাপাশি থাকবে একাডেমিক ভবন, শিক্ষক কর্মকর্তাদের ডরমিটরি শিক্ষার্থীদের আলাদা ছাত্রাবাস। এছাড়া গবেষণা ও ব্যবহারিক কাজের জন্য থাকবে একটি পন্টুন জেটি।

বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির উপাচার্য রিয়ার অ্যাডমিরাল আশরাফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘কার্যক্রম পূর্ণ গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা আশাবাদী ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ করে অস্থায়ী ক্যাম্পাস থেকে আমারদের কার্যক্রম স্থায়ী ক্যাম্পাসে নিয়ে আসতে পারব। আমাদের শিক্ষক, শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থাকবে।’

বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে রাজধানীর মিরপুরে ভাড়া করা দুটি ভবনে। স্থান স্বল্পতা ও সুযোগের ঘাটতির কারণে কেবল পাঁচটি বিষয়ে পাঠদান চলছে। এছাড়াও ব্যবহারিক জ্ঞানের জন্য নির্ভর করতে হচ্ছে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর।

এ বিশ্ববিদ্যালয় সমুদ্র গবেষণা ও কার্যক্রমে দক্ষ জনবল তৈরি করলেও, প্রযুক্তিগত সহায়তা ও সরকারের নীতিগত সহায়তা না পেলে অধরাই থেকে যাবে দেশের সমুদ্র সম্পদ।

এএইচ