সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের অনিন্দ্য সৌন্দর্য্য এক স্থান থেকে দেখার জন্য পর্যটকরা বেছে নেন সাগর কন্যা কুয়াকাটাকে। যেখানে রয়েছে ১০টির বেশি দর্শনীয় স্থান।
শীতের সকালের কুয়াশা কেটে গেলে গঙ্গামতির পাড় ধরে কয়েক কিলোমিটার যেন ভ্রমণ পিপাসুদের মিছিল। বয়সের বাঁধা পেরিয়ে সমুদ্র স্নানেই আনন্দ। কারো সমুদ্র দেখার স্বাদ মেটে পরিবার নিয়ে। কারো প্রিয়জনের সঙ্গে। যেন জল পেরিয়ে দিগন্ত ছুঁয়ার সাধ জাগে আয়েশ করে স্লিপিং চেয়ারে বসলে।
পর্যটকরা বলেন, 'এখানে দেখলে মনে হয় সূর্যটা সমুদ্রের চর থেকে উঠে আসছে। এটা আসলেই অবিশ্বাস্য বিষয়। সাগরের পানির দিকে তাকালে সুন্দর একটা উজ্জ্বলতা দেখা যায়।'
ঝাউ, ছইলা, কেওড়া ও গড়ান এর মতো বৃক্ষের সমাহার দেখতে অনেকেই যান জিরো পয়েন্ট থেকে পাঁচ কিলোমিটার পশ্চিমে লেম্বুর বনে। আর বন্য প্রাণীর দেখা মেলে ফাতরার বনে। বিশেষ সময়ে দেখা মিলে যেতে পারে লাল কাঁকড়ারও।

সমুদ্রের সৌন্দর্য্য উপভোগ করছেন পর্যটকরা
পর্যটকরা আরও বলেন, 'খুব ভালো একটা পর্যটনকেন্দ্র। নেপাল থেকে প্রথমবার এসেছি উপভোগ করলাম অনেক। একপাশে সমুদ্র আরেক পাশে বন সবমিলিয়ে অপূর্ব সুন্দর একটা জায়গা।'
এক বছর আগেও এই তীরে পৌঁছাতে ছিলো সময়ের অনিশ্চয়তা। ছিলো না পর্যাপ্ত পরিবহন ব্যবস্থা। তাতে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বাইরে পর্যটকদের আগ্রহ ছিলো কম। গত ১ বছরে সেসব চিত্র পাল্টে যাওয়ায় পর্যটক দ্বিগুণ বাড়ার পাশাপাশি বিনিয়োগ বেড়েছে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা, টোয়াক'র সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, 'ঢাকার সাথে পদ্মা আর পায়রার সংযোগ হওয়ার পর কুয়াকাটায় অতিথির সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে।'
তবে এখনও কাটেনি আবাসন সংকট। কুয়াকাটায় হোটেল রয়েছে দেড় থেকে ২'শ। যার মধ্যে ভালো মানের হোটেল খুবই কম। পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছেন, নদীপথে সরাসরি সুন্দরবনের সাথে যুক্ত করা গেলে কুয়াকাটার পর্যটন সম্ভাবনা ছাড়িয়ে যাবে কক্সবাজারকে।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ বলেন, 'পাথরঘাটা থেকে চরদুয়ানি ৭-৮ কিলোমিটার জায়গা খনন করলেই সারাবছর সুন্দর যাতায়াত করা যাবে। পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণের পরিকল্পনা আছে।'
ট্যুরিস্ট পুলিশের কুয়াকাটা জোনের ইনচার্জ হাচনাইন পারভেজ এখন টিভিকে বলেন, 'পর্যটন স্পটগুলোতে পোশাকধারি পুলিশ থাকে। এছাড়া আমরা সাদা পোশাকেও নজরদারি করি।'