রাজধানীসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার সাথে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম চাঁদপুর নৌ-বন্দর। যোগাযোগ সুবিধায় প্রতিনিয়ত চাঁদপুর, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, শরীয়তপুরসহ আশপাশের হাজারও মানুষ এই বন্দর ব্যবহার করেন।
অস্থায়ী ব্যবস্থায় চলে আসা এই বন্দরটি দীর্ঘদিন ধরে আধুনিকায়নের দাবি ছিল। যার প্রেক্ষিতে একনেক ২০১৬ সালে চাঁদপুর আধুনিক নৌ-টার্মিনাল নির্মাণের অনুমোদন দেয়। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে প্রথম পর্যায়ে প্রকল্পটির ব্যয় প্রায় ৬৭ কোটি টাকা ধরা হয়। পরে যা বেড়ে ৯৩ কোটি টাকা হয়।
২০২৩ সালে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন প্রকল্পের কাজ শুরু করে। এই প্রকল্পে ১ হাজার ৫শ' স্কয়ার মিটার এলাকায় ৪ তলা বিশিষ্ট ৩টি ভবন নির্মাণসহ নতুন পন্টুন, গ্যাংওয়ে, পার্কিং ইয়ার্ড স্থাপন করা হবে। লঞ্চঘাটের সামনের রাস্তা ও এক্সটার্নাল ব্রিজ চওড়া করা হবে। যা ২০২৫ সালের মে মাসে শেষ হওয়ার কথা আছে।
তবে কাজ শুরুর ৮ মাসে ভবন নির্মাণে প্রয়োজনীয় ৩১০টি পাইলিংয়ের মধ্যে মাত্র ৩৭টি সম্পন্ন হয়েছে। যা পুরো কাজের ১০ শতাংশ। এমন অবস্থায় বাকি ১৪ মাসে ৯০ ভাগ কাজ শেষ করা নিয়ে বন্দর ব্যবহারকারীরা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
একজন যাত্রী বলেন, 'কাজের পরিকল্পনা আরও আগে পাস করার কথা ছিল। সে জায়গায় এখন খুব দেরি হয়েছে। এতে জনগণের জন্য ভালো কোনো ফল আসবে না। এতে যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ছে।'
তবে চলমান লঞ্চঘাট হওয়ায় এখানকার ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করতে দেরি হওয়ায় কাজ শুরু করতে সময় লেগেছে বলে জানান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশনের প্রজেক্ট ইনচার্জ শাকিল আহমেদ। বলেন, 'নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করার চেষ্টা করবো, কিন্তু কিছু সময় বেশি লাগতে পারে।'
এদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের জনবল সংকটের কথা জানিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
চাঁদপুর বন্দর কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, 'ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যেভাবে কাজ করছে এতে তাদের বেশকিছু জনবল ঘাটতি আছে। এ জিনিসগুলো আমরা তাদের লিখিতভাবে জানিয়েছি।'
বর্তমানে চাঁদপুর লঞ্চঘাট দিয়ে প্রতিদিন শতাধিক লঞ্চে গড়ে ১০ হাজার যাত্রী ঢাকা ও দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নৌ-রুটে চলাচল করে। ঈদের সময় সে সংখ্যা লক্ষাধিক ছাড়িয়ে যায়।