দখল-ভরাটে ঢাকায় দেড় যুগে বিলুপ্ত ১২-১৫টি খাল

পরিবেশ ও জলবায়ু
বিশেষ প্রতিবেদন
0

গত দেড় যুগে ভরাট, দখল আর অবকাঠামোর চাপে ঢাকায় বিলুপ্ত হয়েছে ১২-১৫টি খাল। নথিতে উল্লেখ্য থাকলেও বাস্তবে এসব খাল নেই। অবশিষ্টগুলোর অবস্থাও বেশ নাজুক। মূলত অপরিকল্পিত নগরায়নে হারিয়ে গেছে খালের অধিকাংশ অংশ। পরিবেশ উপদেষ্টা জানান, নগরের জলাশয় ঘিরে একটি মাস্টারপ্ল্যান রয়েছে সরকারের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নগর বাঁচাতে এসব খাল শিরা উপশিরার মতন কাজ করে।

বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ, বালু- এই চার নদী ঘিরে রেখেছে রাজধানী ঢাকাকে। এছাড়া বিভিন্ন খাল জালের মতো ছড়িয়ে আছে ঢাকার বুকে।

২ যুগ আগেও ঢাকায় খাল ছিল ৭০ এর বেশি। এখন সে চিত্র বদলেছে, বেশিরভাগ খালই এখন বিলুপ্ত। যেগুলো কোনোভাবে টিকে আছে সেগুলোর দুইপাড়ে বসেছে ইটের পর ইট, কঠিন বর্জ্যে ভরাট হয়েছে বেশিরভাগ অংশ।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, চোখের সামনে খাল ভরাট হয়ে এখন পরিণত হয়েছে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে।

নগর পরিকল্পনাবিদরা জানান, দখল-দূষণে সংকটাপন্ন খাল উদ্ধার করে খনন কাজকে ত্বরান্বিত করতে হবে। আসন্ন বর্ষার কথা মাথায় রেখে সাজাতে হবে কর্মপরিকল্পনা।

পরিবেশবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘এলাকায় যারা খালে ময়লা ফেলছে তাদের যেন সামাজিকভাবে প্রতিহত করা হয় এ ধরনের মেকানিজম ছাড়া ঢাকার মতো এত বড় শহর খাল, ড্রেন সব সময় পরিষ্কার রাখতে পারবে না।’

আর এই ব্যাপারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এর প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার কাছে প্রশ্ন ছিল খাল উদ্ধারে কোন ছকে আগাবে তারা, ভাবনায় কোন কাজটুকু আগে ঠাই পাচ্ছে।

ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার বলেন, ‘তিন থেকে চার ফিট পর্যন্ত কিছু কিছু ক্ষেত্রে পাঁচ ফিট পর্যন্ত পলি জমে গেছে। এ পলি আমরা অপসারণ করবো। অপসারণের পর আরো তিন থেকে চার ফিট খালের তলদেশ খনন করবো। খননের পর সাইডে রিটেইনিং ওয়াল হবে। ওয়াল করার পর সাইড দিয়ে হবে ওয়াকওয়ে।’

ফেব্রুয়ারির শুরুতে গণমাধ্যমে বিষয়টি আরো স্পষ্ট করেন পরিবেশ উপদেষ্টা। বলেন আসছে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা নিরসনে যে সকল উদ্যোগ রয়েছে সরকারের তার মধ্যে বেশি প্রাধান্য পাবে খাল খনন, বর্জ্য অপসারণ কর্মসূচি। পরিবেশ উপদেষ্টা জানান, খালগুলোর ব্যাপারে নগরবাসীকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘এ বর্ষার আগে আপাতত ৬টা, আশা করি এ মাসে আমরা আরো চারটার কাজ হাতে নিব। এ বর্ষার আগে আমরা বাকি ৯টার কাজও শুরু করে দিতে পারবো। অন্তত যাতে পানির প্রবাহ খালগুলোতে আনতে পারি, এটা আমাদের প্রাথমিক টার্গেট।’

সেবা সংস্থাগুলো ঠিক সময়ের আগে নিজ নিজ কাজ শেষ করতে পারলে এবার এর সুফল পেতে পারে নগরবাসী। এখন ঢাকা উত্তর সিটিতে ৩০ টি আর দক্ষিণে বা ডিএসসিসিতে ২৮টি খাল রয়েছে।

এএইচ