চুয়াডাঙ্গায় ব্যবহার অনুপযোগী কোটি টাকার শোধনাগার, বিশুদ্ধ পানির সংকট

চুয়াডাঙ্গা
এখন জনপদে
0

৭ বছর আগে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভায় ভূ-গর্ভস্থ পানি শোধনাগারের উদ্বোধন হলেও পানি সরবরাহ সম্ভব হয়নি। ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত শোধনাগারটি এখন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে আছে। ফলে পৌর এলাকার নাগরিকরা বিশুদ্ধ পানি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বছরের পর বছর। পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, লোকবল সংকটে শোধনাগারটি চালু রাখা সম্ভব হয়নি।

চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ভূ-গর্ভস্থ পানি শোধনাগারের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কাজ শেষ হয় ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে। ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর ওভারহেড ট্যাংক নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলা হয়েছিল, ১ সপ্তাহের মধ্যে পৌরবাসীর দীর্ঘ দিনের চাহিদা সুপেয় পানির সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। কিন্তু ৭ দিন কালক্রমে ৭ বছরে পরিণত হলেও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা পৌরবাসীর জন্য স্বপ্নই রয়ে গেছে।

পৌর কর্তৃপক্ষ বর্তমানে যে পানি সরবরাহ করছে তা মাত্রাতিরিক্ত আয়রনযুক্ত, হলদেটে ও খাবার অযোগ্য বলে জানান স্থানীয়রা। সুপেয় পানির অভাবে দুর্ভোগে পৌর এলাকার ২ লাখ মানুষ।

একজন স্থানীয় বলেন, ‘প্রতিদিন দুর্গন্ধযুক্ত পানি পান করতে হত, আমরা জেনে বুঝে বিষ পান করছি।’

এদিকে, দীর্ঘসময় বন্ধ থাকায় নষ্ট হয়েছে পানি শোধনাগারের সুইস ভালভ, মটর, রিজার্ভ ট্যাংকসহ মূল্যবান জিনিসপত্র। কাঠামোতে জমেছে শ্যাওলা। বছরের পর বছর তালাবদ্ধ থাকায় ভবনগুলোর অবস্থাও জরাজীর্ণ।

একজন গৃহিণী বলেন, ‘পানি এতই দুর্গন্ধযুক্ত যে এই পানি আমরা খেতেও পারি না, রান্নাও করতে পারি না।’

আরেকজন স্থানীয় বলেন, ‘সুপেয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার কথা পৌর কর্তৃপক্ষের, কিন্তু সেই সুবিধা ভোগ করতে পারছেনা পৌর এলাকার মানুষ।’

পানি শোধনাগার কবে চালু হবে এমন প্রশ্নে, খরচ আর লোকবল সংকটের নানা অজুহাত দিলেন পৌরসভার এই কর্মকর্তা।

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রেজাউল করিম বলেন, ‘পানি শোধনাগার প্রকল্পটি অনেক ব্যয়বহুল এবং এর জন্য দক্ষ জনবলেরও প্রয়োজন। আমাদের পৌরসভায় আর্থিক সংকট এবং দক্ষ জনবলের অভাবের কারণে আমরা প্রকল্পটি চালু করতে পারিনি। আমাদের পৌরসভায় কোন ট্রিটমেন্ট প্লান্ট না থাকার কারণে আমরা জনগণকে আয়রণমুক্ত পানি সরবরাহ করতে পারিনি।’

বর্তমানে ১৪টি পানির পাম্প হাউজ থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পৌর এলাকায় গ্রাহকদের পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সুপেয় পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত হবে এমনটাই প্রত্যাশা পৌরবাসীর।

এএইচ