বর্জ্য অপসারণে প্রতিশ্রুতি পূরণের দাবি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের

চট্টগ্রাম
বর্জ্য অপসারণ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের
এখন জনপদে
0

কোরবানির পশুর বর্জ্য সংগ্রহে এবার প্রতিশ্রুতির অনেকটুকুই পূরণের দাবি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের। বিশেষ করে নগরের মূল সড়কের বেশিরভাগ বর্জ্য অপসারণ করেছে চার হাজারেরও বেশি পরিচ্ছন্ন কর্মী। তবে অনেক এলাকায় পর্যাপ্ত ডাস্টবিন ও নালা নর্দমা না থাকায় আবর্জনা ও দুর্গন্ধের দুর্ভোগ হয়েছে।

রোদেলা আকাশ থাকায় পশু কুরবানির পর রক্ত ও বর্জ্য সরাতে বাড়তি বেগ পেতে হয়েছে নগরবাসী ও পরিচ্ছন্ন কর্মীদের। নগরের বিভিন্ন স্থানে দিনের শুরুতে পশু কোরবানি শুরু হলেও বর্জ্য অপসারণের তৎপরতা চোখে পড়ে সকাল ৮ টা থেকে। কর্পোরেশনের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা অলিগলির মুখ থেকে তিন ধাপে চালায় বর্জ্য সংগ্রহের কাজ। প্রতিদিন এক শিফটে কাজ করলেও কুরবানির এই সময়ে তাদের বাড়ে দায়িত্বের বোঝা।

পরিচ্ছন্ন-কর্মীরা জানান, এক মাথা থেকে শুরু করে আরেক মাথা পর্যন্ত যেতে যেতে সারাদিন লেগে যাবে। ৩-৪ বার এরকম করে নেয়া লাগবে। আজকে প্রায় ১২-১৩ গাড়ি ফেলানো হয়েছে। এখন ও বাকি আছে কিছু।

চট্টগ্রামে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা একটি চ্যালেঞ্জের নাম। সেখানে এবার ১০ থেকে ১২ হাজার টন বর্জ্য যোগ হওয়ায় উদ্বেগ ছিল বেশি। যদিও নগরের পথঘাট সড়কে এবার সকাল থেকে মাঠে নামে কর্পোরেশনের ৪ হাজার ২০০ কর্মী। পরিচ্ছন্ন কাজে গতি দেয় সাড়ে তিন শতাধিক যান। বর্জ্য সরিয়ে নিতে দেখা যায় স্থানীয়দের সহায়তাও।

নগরবাসী জানায়, আমরা যা আশা করেছিলাম তার চেয়ে দ্রুত বর্জ্য সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সুপারভাইজার জানান, ৬ টি গাড়ি কাজ করছে, আরও দুইটি টমটম আছে এখনও। এরপরে প্যারোডার আসবে, স্পেশাল টিম আসবে। আমার ওয়ার্ড সহ মোট ২০০ জনের মত কাজ করছে।

সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের দাবী, নগরের বেশিরভাগ মূল সড়ক ও অলিগলিতে বেলা ১২ টার মধ্যে ৪০ শতাংশ বর্জ্য সংগ্রহ হয়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে অধিকাংশ বর্জ্য অপসারণ করেন পরিচ্ছন্ন কর্মীরা। এ নিয়ে স্বস্তি দেখা দেয় জনমনেও।

নগরবাসীরা জানান, এত দ্রুত বর্জ্য অপসারণ হয়েছে এতে আমরা সবাই খুশি।

উপ প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা (চসিক) প্রণব শর্মা বলেন, ‘আমরা টোটাল তিন ধাপে কাজ করছি। অটো আছে, টমটম আছে আবার আমার বড় গাড়ি ও আছে। যদি জনগণ একটু সচেতন হয়, রাস্তাঘাটে ময়লা ফেলে আমাদের খবর দিলে আমরা যেকোনো মুহূর্তে এগুলো নিয়ে আসব।’

কোরবানির ঈদকে ঘিরে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নিয়েছে ১০ হাজার টন বর্জ্য সংগ্রহের চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নগরের মূল সড়ক ও অলিগলি থেকে সিটি কর্পোরেশন তাদের প্রতিশ্রুতির অনেকটুকু পূরণ করতে পারলেও, বাধ সেধেছে অনেক স্থানে পর্যাপ্ত নালা নর্দমা ও ডাস্টবিন সংকট। যার কারণে চাপ তৈরি হয় বড় ডাস্টবিনগুলোতে, অনেক এলাকায় দীর্ঘক্ষণ ছড়ায় দুর্গন্ধ। কিছু কিছু স্থানে পশুর নাড়িভুঁড়ির মতো বর্জ্য নালার উপরের পাইপ কিংবা আবর্জনার স্তূপে আটকে তৈরি করে নতুন প্রতিবন্ধকতা।

এলাকাবাসী জানায়, কিছু এলাকায় ডাস্টবিন না থাকার কারণে সামান্য কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। যদি ডাস্টবিন থাকতো তাহলে আশা করি এই সমস্যা হতো না। সাথে সাথে বর্জ্য পরিষ্কার হয়ে যেতো।

মেয়র জানান, বিকেল ৫ টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণের যেই লক্ষ্য ছিলও তা অনেকটুকুই পূরণ হয়েছে। যদিও নগরে মাত্র দুটি ডাম্পিং ইয়ার্ডে বাড়তি বর্জ্য না ধরায় নন্দিতে নতুন ইয়ার্ড ব্যবহারের আশ্বাস তার।

তিনি বলেন, ‘ম্যাক্সিমাম জায়গায় পরিষ্কার করা হয়ে গেছে৷ আমাদের ডাম্পিং ট্রাকগুলো আমরা বাড়িয়ে দিয়েছি। প্রায় ১৬০/৭০ টার মতো একসাথে পরি-ছন্নতার কাজে নিয়োজিত আছে।’

রোববারও পশু কোরবানি এবং বায়েজিদ এলাকায় চামড়ার আড়তগুলো থেকে যে বর্জ্য হবে তা অপসারণেও সিটি কর্পোরেশন প্রস্তুত আছে বলে জানান মেয়র।

ইএ