আজ (মঙ্গলবার, ১ জুলাই) সকালে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কাটিগ্রাম নজরুল বিদ্যা সিঁড়ি থেকে বের হয় শোক র্যালি। এতে অংশ নেন শহীদ রবিউলের পরিবারের সদস্য, স্থানীয় বাসিন্দা, আর তার হাতে গড়া বিশেষ শিশুদের স্কুল ব্লুমসের শিক্ষার্থীরা।
শহীদের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে কাটিগ্রাম কবরস্থানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এরপর তার স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান ‘ব্লুমস’ প্রাঙ্গণে স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় ব্লুমসের সভাপতি জি আর শওকত আলীর সভাপতিত্বে ও ব্লুমসের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন মানিকগঞ্জে প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস, রবিউল করিমের সহধর্মিণী উম্মে সালমা, রবিউলের ছোটভাই শামসুজ্জমান শামস, সাংবাদিক হুমায়ুন কবির, নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচার) ধামরাই শাখার সভাপতি মো. নাহিদ মিয়া প্রমুখ।
রবিউল করিমের সহধর্মিণী উম্মে সালমা বলেন, ‘রবিউল করিম শুধু নিরাপত্তার দায়িত্বই পালন করেননি। ২০১১ সালে তার গ্রামে গড়ে তুলেছিলেন ব্লুমস নামের বিশেষ একটি বিদ্যালয়। যেখানে সমাজের অবহেলিত, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুরা পায় ভালোবাসা, সুযোগ আর সম্মান। তিনি চেয়েছিলেন সেখানে আবাসিক ভবন হবে, থাকবে বৃদ্ধাশ্রমও। তিনি শহীদ হয়েছেন আর তার অনুপস্থিতিতে আজ থমকে গেছে সেই স্বপ্ন।’
অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তাসহ ব্লুমস এখন নানা সংকটে। এ জন্য তিনি সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
রবিউলের ছোট ভাই শামসুজ্জামান বলেন, ‘জিম্মি উদ্ধার অভিযানে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তার ভাই শহিদ হয়েছিলেন। তার কোনো রাজনৈতিক বা দলীয় পরিচয় ছিল না। তবুও ৫ আগস্টের পর রবিউল করিম ও গুলশান থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিনের স্মৃতিস্তম্ভকে ভেঙে ফেলা হয়েছে, যা দুঃখজনক।’
তিনি আরো বলেন, ‘হলি আর্টিজান বেকারিসহ বিভিন্ন সময়ে দেশ ও মানুষের জন্য আত্মত্যাগকারী শহীদের সম্মান রক্ষার বিষয়টি রাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে। তাদের অপূর্ণ স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে হবে। এ সকল ঘটনায় জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা না হলে শহীদদের অসম্মান করার পাশাপাশি তাদের পরিবারকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে রাখা হবে। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে শহিদ পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার বিষয়টি রাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে।’
এ দিকে বিকেল চারটার দিকে মানিকগঞ্জের পুলিশ লাইনসে রবিউল করিম ফটকের পাশে নির্মিত রবিউল করিমের ম্যুরালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রবিউলের পরিবারের সদস্যরা।