বছরজুড়ে জলাবদ্ধতায় কুমিল্লা বিসিক; অবকাঠামো-নিরাপত্তাহীনতায় মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন উদ্যোক্তারা

জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত কুমিল্লার বিসিক শিল্প নগরীর রাস্তাঘাট
এখন জনপদে
0

শুকনো কিংবা বর্ষা, বছরজুড়ে জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত থাকে কুমিল্লা বিসিক শিল্প নগরী। প্রতিষ্ঠার ৬৫ বছরেও গড়ে উঠেনি প্রয়োজনীয় অবকাঠামো। জলাবদ্ধতার পাশাপাশি নানা অব্যবস্থাপনা আর যাতায়াত সমস্যার কারণে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন উদ্যোক্তারাও। এছাড়া নিরাপত্তা সংকটে শিল্প এলাকায় বাড়ছে চুরি ও চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য।

প্রথম দেখায় ভুতুড়ে বাড়ি মনে হলেও এটি মূলত কুমিল্লা বিসিক শিল্পনগরীর একটি কারখানা। প্রত্যেকটি ভবনের নিচতলা ডুবে আছে ময়লা, আবর্জনাযুক্ত পানিতে। অথচ একসময় এখানেই তৈরি হতো রিকশা ও বাইসাইকেলের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। কিন্তু এখন এটি পরিণত হয়েছে অপরাধীদের আস্তানায়

এভাবে কুমিল্লা বিসিক শিল্পনগরীর ৯ থেকে ১০টি কারখানা পরিত্যক্ত ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। নগরীর অশোকতলায় প্রায় ৫৫ একর জমিতে গড়ে ওঠা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প নগরীর বেশিরভাগ অংশ এখন জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত। অপর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, খানাখন্দে ভরা রাস্তাঘাটের কারণে পণ্য পরিবহন, উৎপাদন ও বিপণন সংকটে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন অনেক উদ্যোক্তা। ফলে ১৫০টি প্লটের এই শিল্প নগরীতে বাড়ছে পরিত্যক্ত কারখানার সংখ্যা। এছাড়া নিরাপত্তা সংকটে শিল্প এলাকাটিতে বাড়ছে চুরি, চাঁদাবাজি ও মাদকসেবীদের দৌরাত্ম্য।

এলাকাবাসীরা জানান, ক্ষুদ্র শিল্প এলাকা হিসেবে যেসব সুযোগ সুবিধা থাকার কথা সেগুলো এখানে নেই। রাস্তায় হাঁটু সমান পানি হয়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে কাস্টমার আসতে পারে না। চুরি, ছিনতাই এর মতো অপরাধও প্রতিনিয়ত ঘটছে।

ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, জলাবদ্ধতা নিরসন, সড়ক সংস্কার এবং অবকাঠামো উন্নয়নে সিটি করপোরেশন ও বিসিক কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও সংকট সমাধানে উদ্যোগ নেই। তবে বিসিক কর্তৃপক্ষের দাবি, ড্রেন ও নর্দমা নিয়মিত পরিষ্কার করা হলেও খালে পানির প্রবাহ না থাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে।

কুমিল্লা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সহ সভাপতি জামাল আহমেদ বলেন, ‘জলাবদ্ধতা আমাদের দীর্ঘদিনের সমস্যা। আমরা চেষ্টা করছি এ সমস্যা সমাধান করার জন্য। এমনকি আমরা সিটি করপোরেশনের মিটিং এ বিষটি তুলে ধরেছি। আমরা চাচ্ছি এর সমাধান হোক।’

কুমিল্লা বিসিকের উপ-মহাব্যবস্থাপক মুনতাসীম মামুন বলেন, ‘আমাদের টেন্ডার হয়ে গেছে। আমরা আশা করছি এ বছরই আমরা এ সমস্যার সমাধান করতে পারবো। আমরা আশা করছি এ অর্থ বছরের পর আমার জলাবদ্ধতামুক্ত বিসিক দেখতে পাবো যদি এ কাজগুলো হয়ে যায়।’

তবে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, জাইকার অর্থায়নে চলতি অর্থবছরের মধ্যেই ড্রেন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সায়েম ভুঁইয়া বলেন, ‘জাইকার অর্থায়নে বড় একটি ড্রেন হবে। ওই ড্রেনটা যদি আমরা বড় করে করতে পারি তাহলে সব পানি গিয়ে ওই ড্রেনে পড়বে। ড্রেন থেকে সোজা দক্ষিণ দিকে চলে যাবে।’

১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কুমিল্লা বিসিক শিল্প নগরী ধুঁকছে অবকাঠামো সংকটসহ নানা সমস্যায়।

ইএ