ধান, নদী, খাল এ তিনে বরিশাল। এ প্রবাদ থেকেই স্পষ্ট যে উপকূলীয় পটুয়াখালীর প্রান্তিক মানুষের বাণিজ্য, জীবন ও জীবিকা নদীকেন্দ্রিক। জেলার নিম্নাঞ্চলের ক্ষুদ্র জেলেদের মাছ শিকার, কৃষকের কৃষিকাজ এবং যোগাযোগ রক্ষাসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবহার বাড়ছে নৌকার। যার ফলে ব্যক্তিগত এবং প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে বছরে ৫০ কোটি টাকার ডিঙি নৌকার উৎপাদন ও বেচা-বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতারা জানান, ছয় হাজার টাকার মধ্যেই মিলছে নৌকা। তারা ব্রিজ পার হতে, মাছ ধরতে নৌকাগুলো ব্যবহার করে থাকেন।
উৎপাদনকারী ও বিক্রেতারা জানান, আট থেকে পনেরো হাত পর্যন্ত নৌকা রয়েছে তাদের কাছে। বিভিন্ন কাঠ দিয়ে তারা এ নৌকা প্রস্তুত করে থাকেন।
বর্তমানে গ্রামীণ ও শহুরে হাট বাজার উন্নত হচ্ছে, বাড়ছে পরিধি। তবে, অস্তিত্ব সঙ্কটে পরেছে নৌকার মত ঐতিহ্যবাহী পণ্যের হাট। তাই নৌকার বাজার সম্প্রসারণের দাবি ব্যবসায়ীদের।
আরও পড়ুন:
ব্যবসায়ীরা জানান, এখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে নৌকা রয়েছে। তবে নৌকা রাখার মতো জায়গার সংকট রয়েছে। বিকল্প জায়গার ব্যবস্থা করার দাবি ব্যবসায়ীদের।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সাগর ও নদ-নদীর পানির উচ্চতা বাড়ছে। এতে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী, কলাপাড়া, মির্জাগঞ্জসহ অন্যান্য উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। ডিঙি নৌকাতেই ভরসা রাখছেন এ অঞ্চলের মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে পুরনো কাঠের নৌকার নকশা অনুযায়ী আধুনিক উপকরণ ব্যবহার করে, নৌকা তৈরির পরামর্শ দিলেন গবেষকরা।
কলাপাড়া জলবায়ু সুশাসন ও শক্তিকরন প্রকল্প কর্মকর্তা আশিকুর রহমান বলেন, ‘ফসল আনা নেয়ার কাজে, চলাচলের কাজে এখন ডিঙি নৌকাকে আরও আধুনিকায়ন করতে হবে।’
কলাপাড়া গবেষক ও সাংবাদিক নেছারউদ্দিন আহমেদ টিপু বলেন, ‘নৌকা বানানোর জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ দেয়া যেতে পারে।সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভেবে দেখতে পারে।’
উপকূলীয় অঞ্চলে ঘন ঘন ঝড়-জলোচ্ছ্বাস হচ্ছে। দরিদ্র মানুষ ক্রমেই ঝুঁকছে নৌকা কেন্দ্রিক জীবিকা নির্বাহের দিকে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠির এ বাহনটি সময় উপযোগী করে নির্মাণ এবং সহজলভ্যতা নিশ্চিতে সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি বিশেষজ্ঞদের।