এমনকি থানায় অভিযোগ করেও আদায় করতে পারেননি পাওনা টাকা। দেনাদারদের কাছ থেকে পাওনা টাকা কোনোভাবেই উদ্ধার করতে না পেরে হতদরিদ্র কাঠুরে ইনতাজ ব্যাপারী স্থানীয় বাজারে দেনাদারদের তালিকা সম্বলিত ব্যানার টাঙিয়ে দিয়েছেন।
লিখে দিয়েছেন দেনাদারের নাম ও পাশে টাকার পরিমাণ। এ ধরনের অভিনব পদ্ধতি অবলম্বন করায় সাধারণ লোকজন এটাকে এক ধরনের প্রতিবাদ বলছেন। আবার কেউ কেউ বিষয়টি নিয়ে শত্রুতার আশঙ্কাও করছেন।
স্থানীয়রা জানায়, ইনতাজ আলী ব্যাপারীর নিজের কোনো জমিজমা নেই। পেশায় কাঠুরে। এটিই তার জীবিকা নির্বাহের একমাত্র মাধ্যম। এখন নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে বাড়িতেই অবস্থান করছেন। অর্থের অভাবে ঠিকমতো চিকিৎসাও করাতে পারছেন না তিনি।
এ অবস্থায় এলাকার ৬ জনের কাছে গাছ কাটা বাবদ বিভিন্ন সময়ে বকেয়া আছে কমপক্ষে ২৫ হাজার টাকা। পাওনা টাকা উদ্ধারে তিনি গত প্রায় ৫ বছর ধরে চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। এর মধ্যে থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দিলেও কোনো কাজ হয়নি।
আরও পড়ুন:
পরে বাধ্য হয়ে তিনি ৪ ফুট বাই ৫ ফুট একটি ডিজিটাল ব্যানারে ৬ জনের নাম লিখে, নামের পাশে টাকার পরিমাণ লিখে বেশ কয়েকটি স্থানে টাঙিয়ে দিয়েছেন।
ব্যানারে লেখা হয়েছে, দিলু ব্যাপারী ৬ হাজার টাকা, হুমায়ুন ব্যাপারী ২ হাজার ৬০০, সুজন ব্যাপারী ৭৫০, নজরুল ব্যাপারী ২ হাজার ৪০০, বারেক গাছের ব্যাপারী ১৩ হাজার ও রতন গাছ কাটে ২০০ টাকা।
আর ব্যানারের নিচে লেখা, ‘থানা থেকে অর্ডার, এই বিষয়টা এলাকাবাসীকে জানানোর জন্য। যদি এই টাকা না দেন তাহলে থানায় মামলা হবে।’ পাওনাদার ইনতাজ আলী সাঁটানো ব্যানারের পাশে দাঁড়িয়ে উৎসুক মানুষকে জানান দেন কেন তিনি এ পদ্ধতি নিয়েছেন।
ইনতাজ আলী ব্যাপারী সাংবাদিকদের জানান, টাকার জন্য তিনি ওষুধ কিনতে পারছেন না। হাতে পায়ে ধরেও টাকা উদ্ধার হচ্ছে না। তাদের লজ্জা দেয়ার জন্য ব্যানার টাঙিয়েছেন তিনি। তাও টাকা না দিলে মাইক নিয়ে বের হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার জালাল উদ্দিন মাহবুব জানান, পাওনা টাকা না দেয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। তবে এভাবে প্রচার না করাই ভালো। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।