মাগুরায় মাশরুম চাষে সফলতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন তরুণের

কৃষি , গ্রামীণ কৃষি
এখন জনপদে
0

মাশরুম চাষ করে সফলতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন মাগুরার বাবুল আখতার। প্রতিবন্ধকতা নিয়েও গড়ে তুলেছেন কোটি কোটি টাকার সম্পদ। পুরো গ্রাম পরিচিতি পেয়েছে মাশরুম ভিলেজ হিসেবে। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বেশ কয়েকবার পেয়েছেন জাতীয় সম্মাননাও।

মাগুরার বড়খরই গ্রামের বাবুল আখতার। পরিবারে ৯ ভাইবোনের মধ্যে তিনি অষ্টম। একসময় কুঁড়ের ঘর ও মাত্র ৩ শতক জমি ছাড়া সম্বল বলতে কিছুই ছিল না তাদের। একদিকে দরিদ্রতা, অন্যদিকে প্রতিবন্ধী সন্তান। সব মিলিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ ছিল না পরিবারের। তবে প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে ১৭ বছরে পৌঁছেছেন সফলতার চরম শিখরে।

গল্পের শুরুটা হয় ২০০৭ সালে। ৮ম শ্রেণি পাসের পর পড়াশোনা ছেড়ে যশোরে হর্টিকালচার থেকে ট্রেনিং নেন মাশরুম চাষে। এরপর ঘরের বারান্দায় মাত্র ১০টি বীজ নিয়ে শুরু করেন মাশরুম চাষ।

একইসঙ্গে নিজেকে দক্ষ করে তুলতে প্রশিক্ষণ নেন মাগুরা যুব উন্নয়ন ও সাভার জাতীয় মাশরুম সেন্টার থেকেও। প্রথমে বিভিন্ন হোটেলে মাশরুম বিক্রি করতেন তিনি। পরে স্থানীয় বাজারে রাস্তার ধারে টং পেতে নিজেই শুরু করেন মাশরুমের চপ বিক্রি।

২০০৯ সালের দিকে ব্যবসার টাকা দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে শুরু করেন মাশরুম চাষ। ১৭ বছরের ব্যবধানে বর্তমানে ৫ একর জমিতে গড়ে তুলেছেন ড্রিম মাশরুম সেন্টার। এতে বীজ উৎপাদন, পাউডার তৈরিসহ বিভিন্ন ধরনের মাশরুম উৎপাদন করছেন তারা। বিশ্বের দামি মাশরুম উৎপাদন করে বাণিজ্যিকভাবে রপ্তানির আশা তার।

তার এই ড্রিম মাশরুম সেন্টারে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় তিন শতাধিক মানুষের। অল্প পুঁজিতে বেশি লাভের কারণে তার কাছ থেকে মাশরুম বীজ সংগ্রহ করতে বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসেন চাষিরা। প্রতিদিন এখান থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের রেস্টুরেন্টে চলে যাচ্ছে প্রায় ৩-৪ টন মাশরুম।

নিজেকে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ার পাশাপাশি নিজ এলাকাকে করেছেন আলোকিত। মাশরুম ভিলেজ হিসেবে নতুন করে পরিচিতি পেয়েছে তার গ্রাম। বাবুলের সেন্টার থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবার।

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, মাশরুম চাষ দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চাষিদের পরামর্শ দেয়াসহ সার্বিক সহযোগিতা দেয়ার কথা জানান তিনি।

এদিকে সেরা উদ্যোক্তা হিসেবে ২০১৮ সালে জাতীয় যুব পদকসহ দুটি সম্মাননা পদক পেয়েছেন বাবুল আখতার।

এএইচ