ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে খেলাপি ঋণের পাহাড়; তিন মাসে বেড়েছে হাজার কোটি টাকা

ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান
দেশে এখন
অর্থনীতি
0

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চে ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২ হাজার ১০০ কোটি টাকা। খাতটিতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে অন্তত ২৭ হাজার ১৮৯ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ৩৫ দশমিক ৩১ শতাংশ। অন্যদিকে ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের ন্যায় চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা মোট ঋণের ২৪ দশমিক ১৩ শতাংশ। তারল্য সংকটে ভোগার পাশাপাশি এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে এখন ব্যাংকের সঙ্গে তীব্র প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে।

দেশের আর্থিক খাতের ইতিহাসে ভয়াবহ দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছেন পি কে হালদার। রাষ্ট্রীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও এনবিএফআই ব্যবহার করে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে পালিয়ে যান ভারতে। যার প্রভাবে দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখনও ভুগছে তারল্য সংকটে। ব্যাংকের সঙ্গে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর চলছে তীব্র প্রতিযোগিতা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, এনবিএফআই খাতে মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৬ হাজার ৯৮৭ কোটি টাকা। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঋণ খেলাপির এ হার কোন ভাবেই কাম্য নয়। খাতটিকে পুনর্গঠন করতে হবে।

অর্থনীতিবিদ এম হেলাল আহমেদ জনি বলেন, ‘৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পরে যেভাবে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে, এটা রাতারাতি মনে হচ্ছে প্রতিদিন বাড়ছে। রাজনৈতিক স্বার্থে বা রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে যারা ঋণ খেলাপি হয়েছেন তাদের একটা উদ্দেশ্যই ছিলো যে আমার তো এ টাকা দিতে হবে না।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে এত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন নেই। এনবিএফআই খাতকে ঢেলে সাজাতে দরকার কঠোর নীতিমালার। সেই সাথে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বাড়াতে হবে তদারকি।

অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবীর বলেন, ‘যারা সুযোগ সন্ধানী তারা ব্যাংক থেকে সরে গিয়ে নন ফিন্যান্সিয়াল প্রতিষ্ঠানগুলোতে ঢুকছে। সেখানে গিয়ে তারা খেলাপি হচ্ছে। এবং সেখান থেকে অর্থ পাচার হচ্ছে কি না সেটাও আমার জানি না। নন ব্যাংকিং ফিন্যান্সিয়াল প্রতিষ্ঠানগুলোর গভর্নেন্সকে আরও ইমপ্রুভ করতে হবে যাতে ব্যাংক খাতের সমস্যাগুলো নন ব্যাংক খাতে না হয়।’

খেলাপিতে জর্জরিত এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিলুপ্তির কথা ভাবছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যাদের কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান ৯৯ শতাংশ ঋণ খেলাপি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘এনবিএফাই নির্বাচন করেছি, তাদের কাছে পত্র প্রেরণ করেছি। এটাকে অন্য ভাষায় বলতে গেলে চরমপত্র। পত্রের ভাষাটা এমন ছিলো যে আপনাদের যে কর্মকাণ্ড তাতে আপনাদের কাজ কেন বন্ধ করে দেয়া হবে না এ বিষয়ে ব্যাখ্যা করেন। বাংলাদেশ ব্যাংক নীতিগতভাবে এগুলো বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

ইএ