চামড়া শিল্পে ইউরোপের ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে সাভারের হেমায়েতপুরে স্থানান্তর করা হয় ট্যানারি শিল্পকে। এমনকি চামড়া শিল্পকে পরিবেশবান্ধব করে লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের সনদও পাওয়া যাবে বলে আশ্বাস দেয়া হয়। তবে নয় বছর পার হলেও সেভাবে দাঁড়াতে পারেনি এই নগরী।
ব্যবসায়ীরা জানান, সেন্ট্রাল অ্যাফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্টের কাজ এখনও শেষ হয়নি। ফলে কঠিন বর্জ্যের কোন স্থায়ী ব্যবস্থাপনা গড়ে না ওঠায় পাওয়া যাচ্ছে না এলডব্লিউজি সনদ। সঠিক পরিকল্পনার অভাবে বিপুল বিনিয়োগের ব্যবসাও এখন বন্ধের পথে।
এ.বি.এস ট্যানারির এমডি ইমাম হোসাইন বলেন, ‘আমাদের মূল সমস্যা হলো সিইটিপি ও স্ম্যাজম্যান। এই দুই জায়গা ঠিক হয়ে গেলে আমরা চামড়া শিল্পে দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতাম। আমাদের এখন লোকাল ব্র্যান্ডের কাছে চামড়া বিক্রি করতে হয়। যারা এলডব্লিউজি সনদপ্রাপ্ত না, আমরা আন্তর্জাতিক কারখানাগুলোতে চামড়া বিক্রি করতে পারি না। আমাদের ক্রেতা কিন্তু আছে, একমাত্র আমরা সনদের জন্য আটকে আছি।’
এবারে ঈদে ঢাকার মধ্যকার চামড়া দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রক্রিয়ার জন্য ১০ দিন ঢাকার বাইরের চামড়া প্রবেশে সরকারের কড়াকড়িকে সাধুবাদ জানান ব্যবসায়ীরা। আর সিইটিপি কর্তৃপক্ষের দাবি, গতবারের তুলনায় এবার প্রস্তুতি অনেক ভালো। তবে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে এই শিল্পকে উন্নীত করতে দরকার বিপুল অর্থ।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, ‘ঈদের দিন ঢাকার বাইরের চামড়া ঢাকায় প্রবেশ করতে পারবে না। আর ঢাকার বাইরের চামড়া ঈদের ১০ দিন পর ঢাকাতে ঢুকবে। এগুলো ভালো ব্যবস্থাপনা। এর মাধ্যমে চামড়া ভালোভাবে সংরক্ষণ করার সুযোগ আছে।’
ঢাকা ট্যানারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট ওয়েস্টেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম শাহনেওয়াজ বলেন, ‘রেক্টিফিকেশন এবং আপগ্রেডেশনের জন্য আমরা যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছি। এর জন্য আমাদের ফান্ডের প্রয়োজন। আশা করছি আমরা এই ফান্ডগুলো পেয়ে গেলে আমাদের সিটিপি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছাতে পারবো।’
আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির জন্য এলডব্লিউজির সনদ পাওয়ার প্রধান শর্ত, ওই কারখানা পরিবেশ দূষণ করতে পারবে না। তবে প্রতিনিয়ত পরিবেশ ও ধলেশ্বরী নদী দূষণের কারণে বাংলাদেশের ট্যানারি শিল্প এলডব্লিউজির সদস্য হতে পারেনি। এতে বৈশ্বিক স্বীকৃতির অভাবে আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে কম মূল্যে চীনে চামড়া রপ্তানি করতে বাধ্য হচ্ছে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা।