১২৬৪ নম্বর পেয়ে কুমিল্লা বোর্ড সেরা অনামিকা

কুমিল্লা
শিক্ষার্থী অনামিক
এখন জনপদে
শিক্ষা
0

চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় কুমিল্লার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছেন অনামিকা দেবনাথ। তিনি ফেনী গার্লস ক্যাডেট কলেজের শিক্ষার্থী। মোট ১৩০০ নম্বরের মধ্যে অনামিকার প্রাপ্ত নম্বর ১২৬৪। অনামিকার বাড়ি কুমিল্লা নগরীর দিগম্বরীতলা এলাকায়।

পড়ালেখার সূত্রে ফেনী গার্লস ক্যাডেট কলেজেই থাকতেন অনামিকা। অনামিকার বাবা দিলীপ কুমার দেবনাথ ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন এবং মা বীণা দেবনাথ কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার ঝাকুনিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা।

যদিও কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে, বোর্ড থেকে প্রথম-দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় স্থান নির্ধারণ করা হয়নি, শিক্ষার্থীরাই নিজেদের মতো করে নম্বর বের করে নেয়।

গত ১০ জুলাই চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। ৬টি জেলার সমন্বয়ে গঠিত কুমিল্লা বোর্ডে এ বছর পাশের হার ৬৩ দশমিক ৬০ শতাংশ। অনামিকা দেবনাথ কুমিল্লা বোর্ডের অধীন ফেনী গার্লস ক্যাডেট কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।

পরীক্ষায় সে বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র মিলিয়ে ২০০ নম্বরের মধ্যে ১৯২, ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র মিলিয়ে ২০০ নম্বরে ১৮৯, গণিতে ১০০ নম্বরের মধ্যে ১০০, বাংলাদেশ অ্যান্ড গ্লোবাল স্টাডিজে ৯৪, হিন্দু ধর্মীয় বিষয়ে ৯৭, পদার্থ বিদ্যায় ৯৮, রসায়নে ৯৭, উচ্চতর গণিতে ৯৯, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে ৫০ এর মধ্যে ৪৮, জীব বিজ্ঞানে ১০০, শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও খেলাধুলায় ১০০ এবং ক্যারিয়ার এডুকেশন ৫০ এর মধ্যে ৫০ পেয়েছে। সব মিলিয়ে সে ১৩০০ নম্বরের মধ্যে পেয়েছে ১২৬৪ নম্বর।

এখনো পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী কুমিল্লা বোর্ডে ১২৬১ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে কুমিল্লার নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী তাসনুভা ইসলাম তোহা।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক রুনা নাছরিন বলেন, ‘শিক্ষাবোর্ড থেকে পরীক্ষার প্রথম, দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় স্থান নির্ধারণ করা হয় না। শিক্ষার্থীরাই মার্কশিট থেকে তাদের মোট নম্বর যোগ করে নেন।’

ভালো ফলের বিষয়ে জানতে চাইলে অনামিকা দেবনাথ বলেন, ‘ফেনী গার্লস ক্যাডেট কলেজের সকল শিক্ষকের সঠিক ও তত্ত্বাবধান ও যুগোপযোগী পাঠদানের কারণেই এমন ফল অর্জন সম্ভব হয়েছে। যেহেতু সেটি আবাসিক, তারপরও শিক্ষকরা সেখানে আমাদেরকে কখনোই মা-বাবার শূন্যতা বুঝতে দেননি।’

তিনি আরো বলেন, ‘প্রতিদিনের অধ্যয়নের জন্য আমি ‘স্পেশাল শিডিউল’ করে নিয়েছি। বিশেষ করে পরীক্ষা শুরুর আগের তিনমাস আমি ক্লাসের পরেও প্রতিদিন অন্তত ৮ ঘণ্টা পড়াশুনা করেছি। নিয়মিত ক্লাস ও মনোযোগ দিয়ে পড়াশুনা করলে সকল শিক্ষার্থীই ভালো ফলাফল করতে পারবে।’

অনামিকা মা স্কুল শিক্ষিকা বিনা রাণী দেবনাথ বলেন, ‘আমাদের মেয়ে ছোটবেলা থেকেই মেধাবী। সে ফয়জুন্নেছায় ভর্তি পরীক্ষায়ও প্রথম হয়েছিল। তারপর ফেনী ক্যাডেটে গেলো, সেখান শিক্ষক থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সকলের অবদানের কারণেই তার ভালো ফল সম্ভব হয়েছে।’

ভবিষ্যতে কি করবেন এমন কথা জানতে চাইলে অনামিকা বলেন, ‘আমি বড় হয়ে নিজে কিছু করতে চাই। রিসার্চ ভিত্তিক কাজ করতে আমি পছন্দ করি। তাই নিজে উদ্যোক্তা হবো।’

নিজের এ সফলতার চাবিকাঠি হিসেবে অনামিকা উল্লেখ করে বলেন, আমার এ সফলতার মূল চাবিকাঠি হলো নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস। নিয়মিত পড়ালেখা করতাম রুটিন করে। যেহেতু ক্যাডেট কলেজের শিক্ষার্থী ছিলাম তাই সব কিছু নিয়ম অনুযায়ী চলতে হতো। সকালে পদার্থবিজ্ঞান ও জীববিজ্ঞান পড়তাম। বিকালে স্কুলের কাজগুলো শেষ করতাম। আর রাতে যে যে বিষয়গুলো সমস্যা রয়েছে সেগুলো নিয়ে পড়াশোনা করতাম।’

প্রসঙ্গত, এ বছর কুমিল্লা বোর্ডে এসএসসি পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৬৩ দশমিক ৬০ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৯ হাজার ৯০২ জন শিক্ষার্থী।

এএইচ