রাকসু ভবন ছাড়তে হতে পারে ১৫ সংগঠনকে, শঙ্কায় সাংস্কৃতিক কর্মীরা

৩৫ বছর পর ছাত্র সংসদ নির্বাচন

রাজশাহী
রাকসু ভবন
শিক্ষা
0

প্রায় ৩৫ বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন ঘিরে শিক্ষার্থীদের মাঝে তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। একদিকে যেমন উচ্ছ্বাস-প্রত্যাশা, অন্যদিকে রয়েছে উদ্বেগ আর শঙ্কা। দীর্ঘদিন ধরে রাকসু ভবনে অস্থায়ীভাবে কার্যক্রম চালাচ্ছে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। তবে ১৫ সেপ্টেম্বর রাকসু নির্বাচনের পর ছাড়তে হবে জায়গা। ফলে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর মধ্যে দেখা দিয়েছে গভীর উদ্বেগ। নির্বাচনের আগেই প্রশাসনের বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি শিক্ষার্থীদের।

দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ রাকসুর কার্যক্রম। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে রাকসু ভবনে অস্থায়ীভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে ১৫টি সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন।

তবে রাকসু চালু হলে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ভবনটি ব্যবহার করা হবে। ফলে শঙ্কায় আছেন এসব সংগঠনের কর্মীরা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, রাবি সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব বলেন, ‘এটি একটি পুরোনো বিশ্ববিদ্যালয় হলেও একটি পূর্ণাঙ্গ টিএসসিসি নেই। আমরা দীর্ঘ একবছর থেকে প্রসাশনের কাছে দাবি জানিয়ে আসছি। তবে প্রশাসনের পক্ষথেকে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি চোখে পড়েনি।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অরণী সাংস্কৃতিক সংসদের সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতান বলেন, ‘রাকসু নির্বাচন হওয়ার পরে আমাদের রুমগুলো ছেড়ে দিতে হবে। প্রশাসন থেকে আমাদের এখনো জানানো হয়ানি আমাদের স্থায়ীভাবে কোথায় নেয়া হবে।’

আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর হতে যাচ্ছে রাকসু নির্বাচন। এরইমধ্যে আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি গুছিয়ে নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ অবস্থায় রাকসু ভবনে থাকা সংগঠনগুলোকে কক্ষ বরাদ্দ দেয়ার আহ্বান শিক্ষার্থীদের। বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ টিএসসিসি নির্মাণের দাবিতে একমত ছাত্র সংগঠনগুলোও ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, রাকসু ভবনটি টিকিয়ে রেখেছিলো সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো। তারা শুধু রাকসু ভবন নয়, বিশ্ববিদ্যালয়কেও সজীব করে রেখেছিলো। তাদের স্থায়ীভাবে পুনর্বাসন না করলে এ সংগঠনগুলোকে বাস্তুহারা করা হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, রাবির সাংস্কৃতিক কর্মী ও সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘এদের স্থায়ীভাবে পুনর্বাসন না করলে, সাংস্কৃতিকেন্দ্র বানানোর জন্য পূর্বে সাংস্কৃতিক কাজ যারা করতো তাদের বাস্তুহারা করা হবে।’

ছাত্রদল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, ‘আমাদের সাংস্কৃতিক সংগঠন সংস্কার না করে ও রাকসু ভবন সংস্কার না করে টিএসসিসিকে একটি কবরস্থানে পরিণত করা হয়েছে।’

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদ ফয়সাল বলেন, ‘রাকসু ছাত্র এবং প্রশাসনের সাথে সেতুবন্ধন করে কাজ করে।’

তবে রাকসু ভবনে থাকা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সংকট সমাধানে ও পূর্ণাঙ্গ টিএসসিসির বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শহিদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার টিএসসিসি পরিচালক প্রফেসর ড. মুর্শিদা ফেরদৌস বিনতে হাবিব বলেনে, ‘সব সংগঠনগুলোকে কীভাবে প্রতিস্থাপন করা যাবে, তা নিয়ে ভাবছি। আমাদের প্রশাসন খুবই সংস্কৃতি বান্ধব তারা চেষ্টা করছেন এ বিষয়ে।’

এফএস