৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচনের ডামাডোল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। পাশাপাশি ২১টি আবাসিক হলেও অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন। এসব হল সংসদে মোট পদ ৩১৫টি। এর মধ্যে ১৩০টি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। আর ৬৪টি পদে কেউ মনোনয়নই তুলেননি।
জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের খসড়া প্রার্থী তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ছাত্রদের ১১টি আবাসিক হলে ১৫টি করে মোট ১৬৫টি পদ আছে। এ ১৬৫ পদের মধ্যে আটটিতে কোনো প্রার্থী নেই এবং ৬১টি পদে একক প্রার্থী রয়েছে। মেয়েদের হলগুলোর চিত্র আরও করুণ। দশটি আবাসিক হল সংসদের ১৫০ পদের মধ্যে ৫৬টিতে কোনো প্রার্থী নেই। আর ৬৯টি পদে একজন করে প্রার্থী রয়েছেন। দীর্ঘদিন পর জাকসু নির্বাচন হওয়ায় এর গুরুত্ব বুঝতে না পারা, হল রাজনীতিমুক্ত রাখা ও সাইবার হেনস্তার কারণে আগ্রহ কম বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারছে না জাকসুতে আসলে তারা অপরাজনীতির শিকার হবেন কিনা। এজন্য হল সংসদ নির্বাচনে তারা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। রাজনীতির প্রতি আগ্রহ কমে যাওয়া আগামীর বাংলাদেশের জন্য আশঙ্কাজনক বলে মনে করছেন অধিকাংশ শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন:
লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির বাইরে শিক্ষার্থী সংসদের এ নির্বাচন বিমুখতার প্রভাব বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় রাজনীতিতে পড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রার্থীদের। একই সঙ্গে নারীদের জন্য নিরাপদ একটি পরিবেশ তৈরির দাবিও তাদের।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, সাম্প্রতিক সময়ে রাজনীতি বিষয়ে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক অঙ্গনে নারীদের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না, যার জন্য নারীদের অংশগ্রহণ কম।
এদিকে ১৩ নম্বর ছাত্রী হলে চারটি পদের বিপরীতে ছয়জন প্রার্থী হয়েছেন। হল সংসদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, সংসদের মিটিংয়ের জন্য কোরাম পূর্ণ করতে হলে সাত জন সদস্য প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে এখানে চারজন নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং দু’জন শিক্ষক প্রতিনিধি মিলেও কোরাম পূর্ণ হবে না। ফলে অকার্যকর থাকার আশঙ্কা রয়েছে ১৩ নম্বর ছাত্রী হল সংসদের। বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
জাকসু সদস্য সচিব একেএম রাশিদুল আলম বলেন, ‘যেখানে কোনো প্রকার প্রার্থীর কমতি আছে আমরা তা দূর করার জন্য পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো আলোচনার মাধ্যমে।’
আগামী ১১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দশম জাকসু নির্বাচন। এবার মোট ভোটার ১১ হাজার ৯১৯ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৬ হাজার ১০২, ছাত্রী ৫ হাজার ৮১৭।