ডাকসু ঘিরে উৎসবমুখর ক্যাম্পাস, প্যানেলগুলোর ভিন্ন রকম ইশতেহার

আব্দুল কাদের, সাদিক কায়েম, আবিদুল ইসলাম খান ও উমামা ফাতেমা
ক্যাম্পাস
শিক্ষা
0

আগামী ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড তকমা থাকলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রয়েছে নানান সংকট। দীর্ঘদিন পর হতে যাওয়া এ নির্বাচন ঘিরে প্রার্থীরা তুলে ধরেছেন ইশতেহার। প্রধান প্যানেলগুলোর বাইরেও অন্য প্যানেলগুলোতেও রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানের করে গড়ে তুলতে নানা ইশতেহার।

ছাত্রদল

ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল ১০ দফা ইশতেহারে মোট ৬৫টি প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেছে। ইশতেহারে শিক্ষা ও গবেষণা প্রাধান্য দিয়ে রাখা হয়েছে আধুনিক, আনন্দময়, বসবাসযোগ্য ও নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়ে তোলার অঙ্গীকার। পাশাপাশি নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ ও স্বাস্থ্যসেবা, কারিকুলাম ও গবেষণার আধুনিকায়ন, পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ ও শাটল সার্ভিস, হয়রানি মুক্ত প্রশাসনিক সেবা, শিক্ষা ঋণ ও কর্মসংস্থান, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের সম্প্রসারণ, ডিজিটাল সুবিধা ও সাইবার নিরাপত্তা, পরিবেশ সংরক্ষণ ও প্রাণীবান্ধব ক্যাম্পাস এবং কার্যকর ডাকসু প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি রয়েছে। আরও রয়েছে—গেস্টরুম ও গণরুম সংস্কৃতি, জোরপূর্বক রাজনৈতিক কর্মসূচি ও দমন–নিপীড়নের মতো চর্চা বন্ধ করে ক্যাম্পাসকে সন্ত্রাস ও দখলদারিত্ব মুক্ত করা।

ছাত্রশিবির

‘১২ মাস, ৩৬ সংস্কার’ বিষয়ক এ ইশতেহার ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের। যেখানে ছয়টি হ্যা এবং ছয়টি না-সহ রয়েছে ৩৬ দফা। ডাকসু নির্বাচনকে অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডারের অন্তর্ভুক্ত করা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ফ্যাসিবাদের দোসরমুক্ত করা, গেস্টরুম-গণরুম কালচার ফিরে আসার সব পথ রুদ্ধ করার করার প্রস্তাবনা রয়েছে।

এছাড়াও, সাম্য, মোফাজ্জল ও আবু বকর হত্যাসহ ফ্যাসিবাদী আমলে সংঘটিত সব নিপীড়নের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করা, আবাসন সংকটে নানান পদক্ষেপের কথাও রয়েছে এতে। খাবারের মান নিশ্চিতে নানামুখী পদক্ষেপ, আবাসিক ও অনাবাসিক নারী শিক্ষার্থীদের জন্য হলের নিয়ম সহজী করণ করা, প্রশাসনিক ভবনের সেবা কেন্দ্রিক লাল ফিতার দৌরাত্ম্য নিরসন করে পেপারলেস রেজিস্ট্রার বিল্ডিং গড়ে তোলা সহ আরও আরও অনেক কিছুই রয়েছে ইশতেহারে।

আরও পড়ুন:

বাগছাস

বাগছাস সমর্থিত ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেল আটটি প্রস্তাবনায় মোট ৫০ দফা দাবি উপস্থাপন করেছে। এতে প্রাধান্য পেয়েছে ডাকসুকে নিয়মিত করা, অ্যাকাডেমিক, প্রশাসনিক ও গণতান্ত্রিক সংস্কার, আবাসন সংকট নিরসনে পদক্ষেপ, শিক্ষার্থীর মর্যাদা রক্ষা, ইন্টারনেট সহজীকরণ, খাবারের মান, ক্যারিয়ার ও দক্ষতা উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া কার্যক্রম, নারী শিক্ষার্থীদের আবাসন।

উমামা

‘নয় দলীয়করণ, নয় বিরাজনীতিকরণ’ এ স্লোগান সামনে রেখে ডাকসু নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করেছে উমামা ফাতেমার নেতৃত্বাধীন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেল। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রাজনীতি সচেতন করা, ক্যাম্পাসকে দলীয় রাজনীতি মুক্ত রাখা এবং অ্যাকাডেমিক পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে ইশতেহারে ১১টি লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী প্যানেল।

বাম

বাম সংগঠন সমর্থিত প্যানেল প্রতিরোধ পর্ষদ। ‘সমতায়-প্রতিরোধে, নিরাপদ ক্যাম্পাস’ স্লোগান সামনে রেখে ইশতেহারে মোট ১৮টি দফা তুলে ধরেছে প্রতিরোধ পর্ষদ।

ছাত্র অধিকার

ছাত্র অধিকার পরিষদ সমর্থিত প্যানেল ডাকসু ফর চেঞ্জ। গত বৃহস্পতিবার ১৪ দফা সংবলিত একটি ইশতেহার দেয় প্যানেলটি। এ প্যানেলের ১৪ দফা ইশতেহার হচ্ছে ডাকসুকে নিয়মিত ক্যালেন্ডার ইভেন্টে পরিণত করা ও ডাকসু চলমান থাকতেই পরবর্তী ডাকসুর প্রস্তুতি সম্পন্ন করা। শিক্ষার্থীদের দাবি ‘ওয়ান স্টুডেন্ট, ওয়ান বেড, ওয়ান টেবিল’ লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করা। অনতিবিলম্বে প্রথম বর্ষ ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থা করা, তার আগ পর্যন্ত মেধা ও প্রয়োজনের ভিত্তিতে আবাসিক বৃত্তির ব্যবস্থা করা। খাবারের মান উন্নত করা। প্রয়োজনে এ ক্ষেত্রে ভর্তুকির ব্যবস্থা করা। ফুল ফ্রি স্কলারশিপ ফর এভরি স্টুডেন্ট লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করা। অনতিবিলম্বে মেধা ও প্রয়োজনের ভিত্তিতে খণ্ডকালীন চাকরি ও ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করা। বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের জন্য আউটসোর্সিংয়ের ব্যবস্থা করা। বিদ্যমান গবেষণা কেন্দ্রগুলোকে আরও উন্নত ও আধুনিক করে বিশ্বমানের গবেষণা কেন্দ্রে রূপান্তর করা। আধুনিক সুবিধা সম্পন্ন পর্যাপ্ত লাইব্রেরির ব্যবস্থা ও শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি ওয়াই-ফাইয়ের ব্যবস্থা চালু করা।

ইএ