প্রস্তুত সবুজ মাঠ। প্রস্তুত সব খেলোয়াড়। তবে রক্ত-মাংসের মানুষ নয়, ফুটবলের এই ময়দানে মেলবে রোবট।
স্পেস ইনোভেশন ক্যাম্পের উদ্যোগে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে আযোজিত রোবোটিক্স প্রতিযোগিতার। শিশু-কিশোরদের রোবোটিক্স ও স্ট্রিম শিক্ষায় অনুপ্রাণিত করতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল 'রোবো কিকার্স, ন্যাশনাল সকার বট চ্যাম্পিয়নশিপ ফর কিডস।' এ প্রতিযোগিতায় সারাদেশ থেকে শিশু-কিশোররা নিজ হাতে বানানো রোবট নিয়ে হাজির হয় আয়োজনের মঞ্চে।
রোবটিক্স নিয়ে জমজমাট এ লড়াইয়ে অংশ নেয় ৬ থেকে ১৩ বছর বয়সী শিশু-কিশোররা। দেশের ৩০টিরও বেশি স্কুল থেকে প্রায় ৫০টি দল প্রতিযোগিতার নক-আউট ফরম্যাটে অংশ নেয়।
রোবট দিয়ে ফুটবল খেলানোর এমন আয়োজন শিক্ষার্থীদের কাছে এক নতুন অভিজ্ঞতা। প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জেতার আগ্রহ তাদের চোখে-মুখে।
প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আসা এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি এর আগে কখনো জানতাম না, রোবট দিয়েও ফুটবল খেলা যায়। স্কুলে যখন প্রথম এটার বিষয়ে জানতে পারি তখন আমার আগ্রহ বেড়ে যায়।’
আরও পড়ুন:
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি দুইদিন সময় নিয়ে রোবট বানিয়েছি। আজকে প্রতিযোগিতায় এসেছি, দুই গোল করে প্রথম ম্যাচ জিতেছি।’
এমন আয়োজনে সন্তানদের দিয়ে আসতে পেরে উচ্ছ্বসিত অভিভাবকরাও। এ আয়োজনের মাধ্যমে রোবোটিক্স ও প্রযুক্তিজ্ঞানে শিশুদের আগ্রহ জন্ম নেবে বলে মনে করছেন তারা।
একজন অভিভাবক এখন টিভিকে বলেন, ‘আমি আমার ছেলেকে নিয়ে এসেছি। এখান থেকে ও নতুন কিছু শিখতে-জানতে পারবে। মোবাইল বা সোস্যাল মিডিয়ার বাইরে পড়ালেখা, রোবট-মহাকাশ নিয়ে ওর আগ্রহ বাড়ুক।’
৬ থেকে ১৩ বদর বয়সী শিশু-কিশোররা নিজেদের বানানো সকার বট নিয়ে অংশ নেয় নকআউট ফরম্যাটের প্রতিযোগিতায়। প্রযুক্তি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খেলতে খেলতে শিশুরা রোবোটিক্সের ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জন করতে পারছে।
ইউআইইউ মার্স রোভার টিমের মেন্টর আবিদ হোসেন বলেন, ‘ভবিষ্যতটাই রোবটিক্সের। এআই আর রোবটিক্সের এই সময়ে বাচ্চারা রোবট নিয়ে কাজ করা শুরু করে দিয়েছে। ভবিষ্যতে ইসরোর থেকে ওরাই ভালো রোবট বানাবে এবং মহাকাশে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করবে।’
আয়োজকদের ভাষায়, রোবো কিকার্স' শিশুদের প্রযুক্তি শিক্ষায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এই আয়োজন। পাশাপাশি এসব শিশু-কিশোরদের হাত ধরেই ভবিষ্যতে দেশের প্রযুক্তি-উদ্ভাবনের দ্বার উন্মোচিত হবে।
এ বিষয়ে স্পেস ইনোভেশন ক্যাম্পের প্রেসিডেন্ট আরিফুল হাসান অপু বলেন, “আমরা সব সময় চাই আমাদের সন্তানেরা বিজ্ঞানমুখী হয়ে উঠুক। আজকে একটা বাচ্চা যখন রোবট বা মহাকাশ নিয়ে জানবে, তখন তার মধ্যে আরও জানার আগ্রহ কাজ করবে। এই ছেলে-মেয়েরা এক সময় রোবট বানাবে, মহাকাশে যাবে।”
এবারের আযোজনে ৬-১০ বছর ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয় টিম টেক টাইটান এবং ১১-১৩ বছর ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন টিম নিউরাল নেটওয়ার্ক। চ্যাম্পিয়ন-রানার্সআপ ট্রফি ছাড়াও প্রতিটি অংশগ্রহণকারীকে উৎসাহমূলক সনদপত্র ও মেডেল দেয়া হয়।