চলতি মাসের শেষদিকে বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়ে তা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা সম্ভাব্য দুটি ঘূর্ণিঝড়ের নাম দিয়েছে ‘শক্তি ও ‘মন্থা’।
এর আগে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং ও মোখায় ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছিল এই উপকূলে। নতুন করে আবার শক্তি সঞ্চার করে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়। প্রতিবার নিজেদের রক্ষা করতে পারলেও তাদের বসতঘর, ফসলি জমি, গবাদি পশু ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের উপকূলের মেঘনা নদী ও সাগর এলাকায় প্রায় দুই লাখেরও বেশি মানুষ বসবাস করে। ঝড় এলেই তাদের ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। আসন্ন ঘূর্ণিঝড় নিয়ে উপকূলজুড়ে আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। স্বাভাবিকভাবে এসব দুর্যোগকে কেন্দ্র করে নদী ভাঙনও বেড়ে যায় বিভিন্ন পয়েন্টে। এমন পরিস্থিতিতে উঁচু বাঁধের ও নদী ভাঙন প্রতিরোধের দাবি জানিয়েছেন উপকূলবাসী।
স্থানীয়রা জানান, লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর আব্দুল্লাহতে ২২ হাজার, মাইজের চরে ১ হাজার, কমলনগর উপজেলার চর শামসুদ্দিনে ৫ শতাধিক, চর কাঁকড়ায় ৫ শতাধিক, সদর উপজেলার চর মেঘায় প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মানুষ বসবাস করে। এসব চরের চারপাশে কোনো নদী রক্ষা বাঁধ নেই। যার কারণে সামান্য জোয়ার আসলেই এসব চরের লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে।
স্থানীয়রা বলছেন, গত তিন চার বছর মে মাসে কখনোই লক্ষ্মীপুরের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে জোয়ারের পানি প্রবেশ করেনি। প্রতি বছর জুলাই এবং সেপ্টেম্বর মাসে কেবল জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করতো। কিন্তু এবছর মে মাসে অর্থাৎ গত ৩ দিন থেকে জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করা শুরু করেছে। যা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে।
লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মন্থার ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে সব ধরনের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছি। প্রাথমিকভাবে আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দেওয়ার পাশাপাশি নিরাপত্তায় প্রস্তুত রয়েছে পুলিশ বাহিনী ও চিকিৎসা সেবায় মেডিকেল টিম। সতর্কতা সংকেত বাড়ানো হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
জানা যায়, আবহাওয়া অফিসের সতর্কবার্তার পর থেকেই গভীর নদীতে থাকা জেলেরা মাছ ধরা বন্ধ রেখে উপকূলে ফিরে আসছেন। তবে এখন পর্যন্ত নদীতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় কিছু কিছু জেলে নদীর তীরবর্তী এলাকায় অবস্থান নিয়ে মাছ শিকার করছেন।