সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে আটক বাংলাদেশিদের ঘটনা নিয়ে আলোচনা চলছে দু'দেশেই। দেশটির পুলিশ জানিয়েছে সন্দেহভাজনরা প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে চরমপন্থি বিশ্বাস ও আদর্শ ছড়াচ্ছিলেন। প্রচারের মাধ্যম হিসেবে সামাজিক মাধ্যম ও হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রামকে বেছে নেয় দলটি। পুলিশ দাবি করছে, উগ্র মতাদর্শের এই দলের কার্যকলাপ ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টিকে বেশ গুরুত্ব দিয়েই বিবেচনা করছে মালয়েশিয়া। বিদেশিদের মধ্যে চরমপন্থি মনোভাবের বিস্তার মোকাবেলায় একটি মডেল তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছে মালয়েশিয়ার ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট বিভাগ।
মালয়েশিয়া প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের মন্ত্রী ড. মোহদ নায়িম মোক্তার বলেন, ‘আমরা চাই তারা ইসলাম সম্পর্কে সত্যিকারের মধ্যপন্থী উপদেশে ফিরে আসুক। যদি সফলভাবে তা করতে পারি তাহলে শুধু আমাদের দেশের নিরাপত্তা বাড়াতে সহয়তা করবো না, বরং তাদের দেশের সরকারের বিরুদ্ধে হুমকি কমাতেও সহায়তা করতে পারবো।’
এদিকে জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে দেশের নাম উঠে আসায় দীর্ঘদিনের সুনাম নষ্ট হয়েছে বাংলাদেশি প্রবাসীদের। নিজেদের ভাবমূর্তিসহ ভবিষ্যৎ নিয়ে এমন উদ্বেগ দেখা দিয়েছে অনেকের মাঝে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, আকস্মিক এই ঘটনা দীর্ঘদিনের বদ্ধুসুলভ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে ছেদ ফেলবে না।
মালায়া ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মেহেদী মাসুদ বলেন, ‘জঙ্গি মালয়েশিয়ার হোক বা বাংলাদেশের হোক সব জায়গার জন্যই সমান ঠেট। তারা দেশ ও জাতির শত্রু। তাদেরকে শক্ত হাতে দমন করতে হবে।’
এমন অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকাসহ মালয়েশিয়ার আইন শৃঙ্খলা ও সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রবাসীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার তাগিদ দিয়েছেন তিনি, যার উদ্যোগ নিতে হবে হাই-কমিশনকে।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মেহেদী মাসুদ বলেন, ‘আমাদের আশপাশে লুকিয়ে থাকা কোন সন্দেহভাজন লোক যদি এসব জঙ্গি কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকে তাহলে তাদের আমরা আইন শৃঙ্খলার হাতে তুলে দিতে পারি। অথবা যারা এসব সংগঠনের সাথে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন তারা যেন এখান থেকে ফিরে আসতে পারেন, এসব সংগঠনে জড়িত হতে না পারে সেজন্য আমাদের সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম করতে হবে।’
তবে ধর্মের নামে জঙ্গিবাদ ইসলাম সমর্থন করে না। ইসলামী চিন্তাবিদরা জানান, এসব বিশৃঙ্খল কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত তারা মানবতার শত্রু।
আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় মালয়েশিয়ার পিএইচডি গবেষক মাওলানা মিসবাহ উদ্দিন বলেন, ‘পৃথিবীতে ইসলাম একমাত্র ধর্ম যার একমাত্র লক্ষ্য বোমাবাজি, সন্ত্রাস এসব বাদ দিয়ে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।’
ভালোভাবে না জেনে হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামের কোনো গ্রুপে যুক্ত না হওয়ার পরামর্শ সচেতন মহলের।