কানাডায় ৩১০০ কোটি ডলারের শিক্ষাখাতে বড় ধরনের ধস, চলছে গণছাঁটাই

ক্লাসরুম
প্রবাস
0

বিদেশি শিক্ষার্থী কমানোর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হওয়ায়, ব্যাপকহারে অর্থনৈতিক সংকটে কানাডা। প্রায় ৩ হাজার ১০০ কোটি ডলারের শিক্ষাখাতে বড় ধরনের ধস, চলছে গণছাঁটাইও। এ অবস্থায় আবারও শিক্ষার্থীদের জন্য দরজা উন্মুক্ত করার কথা ভাবছে সরকার। তবে তা নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তার বেড়াজাল প্রকট।

এই তো গেল বছরও উচ্চ শিক্ষার জন্য বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের পছন্দের শীর্ষে ছিল কানাডা। ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী কমানোর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হওয়ায় ব্যাপক হারে ভিসা প্রত্যাখ্যান হচ্ছে। তাই হতাশ অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী। এ তালিকায় বাংলাদেশি ছাড়াও আছেন বিশ্বের নানা দেশের মানুষ।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাওয়ার পথও আপাতত নেই। তাই সংকট হয়েছে আরও প্রকোট।

সারাবিশ্ব থেকে বিদেশি শিক্ষার্থী সংখ্যা কমায়, নর্থ আমেরিকার শিক্ষা ব্যবস্থাতেও অর্থনৈতিক ধস নেমে এসেছে। পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২ সালে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আসে প্রায় ৩১শ' কোটি ডলার। গোটা কানাডায় তিন লাখ ৬০ হাজারের বেশি কর্মসংস্থান ছিল কেবল এ খাতেই। বর্তমানে যা পড়তির দিকে।

ইতোমধ্যে প্রায় দুইশ' কোটি ডলারের ক্ষতি হয়েছে। চাকরি চলে গেছে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষের। অনেক কোর্স বা প্রোগ্রাম বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ প্রশাসন।

কানাডার শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মো. আসিউজ্জামান বলেন, ‘গত একবছরে প্রায় ১০ হাজার লোক চাকরি হারিয়েছে বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি ও কলেজে কর্মরতরা। প্রায় ৬০০ মতো প্রোগ্রাম বাতিল করা হয়েছে।’

এ দেশে শিক্ষার্থীরা বৈধভাবে কাজ করতে পারেন। অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাই শিক্ষার্থী নির্ভর। বাসাও নানা স্থানে খালি, যা আগে ছাত্রাবাস বা ছাত্রীনিবাস ছিল। বিশ্লেষকরা বলছেন, চাকরি ও বাসস্থানের যে বিষয়টির জন্য প্রধানত কানাডা শিক্ষার্থী সংখ্যা হ্রাস করেছে, তার সমাধান না করে আবারও ছাত্রছাত্রীদের জন্য দরজা উন্মুক্ত করা ভুল সিদ্ধান্ত হবে।

তবুও সরকার ইতোমধ্যে জানিয়েছে, তারা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাড়ানোর কথা ভাবছে।

কানাডার শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মো. আসিউজ্জামান বলেন, ‘যে ৪ লাখ ৩৭ হাজার স্টাডি পারমিট দেয়া হবে সেটা জনসংখ্যার উপর নির্ভর করে প্রদেশগুলোতে ভাগ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

বর্তমানে অন্টারিও, আটলান্টিক কয়েকটি প্রদেশ এবং ব্রিটিশ কলাম্বিয়া সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। আয় যেমন কমেছে, তেমনি বাড়ছে শিক্ষাখাতে বেকারত্বও। অন্যদিকে শিক্ষার্থীবান্ধব কিছু খণ্ডকালীন চাকরিতেও দেখা দিয়েছে সংকট।

একদিকে, অতিরিক্ত মার্কিন শুল্ক সামলাতে হিমশিম দশা, অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ শিক্ষাখাতেও ধস। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি বেগতিক।

সেজু