প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেয়া হচ্ছে সিআইপি মর্যাদা, বাড়ছে রেমিট্যান্স প্রবাহ

প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেয়া হচ্ছে সিআইপি মর্যাদা, বাড়ছে রেমিট্যান্স প্রবাহ
প্রবাস
0

দেশে পটপরিবর্তনের পর অবৈধ পথ পরিহার করে বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠাতে উৎসাহিত হচ্ছেন প্রবাসীরা। অন্যদিকে, প্রবাসী বাংলাদেশিদের সিআইপি মর্যাদা দেয়ায় রেমিট্যান্সে আসছে ইতিবাচক পরিবর্তন। এক লাখ ডলার পাঠানোর শর্তে সিআইপি আবেদনের সুবিধা থাকায় প্রতি বছর বাড়ছে এ সংখ্যা। এতে করে রেমিট্যান্স প্রবাহ আরও বাড়ার সম্ভাবনা দেখছেন তারা।

গেলো এক বছরে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে একাধিক রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা দেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ পরিমাণ রেমিট্যান্স।

সরকারের নানা পদক্ষেপ ও প্রচারের কারণে হুন্ডির মতো অবৈধ পন্থা পরিহার করে বৈধ পথে টাকা পাঠাতে উৎসাহিত হচ্ছেন প্রবাসীরা। প্রতি বছর অনিবাসী বাংলাদেশিদের সিআইপি নির্বাচিত করার কারণেও রেমিট্যান্সে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। বেড়েছে বৈধ পথে টাকা পাঠানোর প্রতিযোগিতাও।

সংশ্লিষ্টদের মধ্যে একজন জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেড়েছে এবং এর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

রেমিট্যান্স পাঠানোর মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় সরকার তিনটি বিভাগে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা সিআইপি নির্বাচিত করা হয়। 

আরও পড়ুন:

অনিবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে বৈধ পথে সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণকারী, বিদেশে বাংলাদেশি পণ্যের আমদানিকারক ও দেশের শিল্পক্ষেত্রে সরাসরি বিনিয়োগকারীরা এ মর্যাদা পেয়ে থাকেন। আর প্রায় প্রতি বছরই এ তালিকায় এগিয়ে থাকেন সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, সৌদি আরব ও যুক্তরাজ্যের প্রবাসীরা।

গেলো পাঁচ বছরের পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বের নানাপ্রান্ত থেকে বৈধ পথে সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণকারী অনিবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে সিআইপি হয়েছেন ৩২৬ জন। এ তালিকায় এগিয়ে আছেন সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসীরা।

বিদেশে বাংলাদেশি পণ্যের আমদানিকারক হিসেবেও দেশটি থেকে পাঁচ বছরে সিআইপির মর্যাদা পেয়েছেন আরও ১০ জন প্রবাসী বাংলাদেশি। রেমিট্যান্স প্রবাহে গতি বাড়াতে পর্যায়ক্রমে সিআইপির সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করার দাবি প্রবাসীদের।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের শ্রমিক নেতা ও ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘সিআইপি যারা নির্বাচিত হচ্ছেন, আগামী দিনে আমি বলবো যে, বেশি করে সিআইপির কোটা আরব আমিরাতে বৃদ্ধি করা হোক।’

দুবাইয়ের বাংলাদেশ সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ইয়াকুব সৈনিক বলেন, ‘যারা সিআইপি হয়ে আসে, তাদেরকে যদি আমরা সম্মান জানাই, তাদের দেখাদেখি সামনে আরও অনেকে সিআইপি হওয়ার জন্য, বাংলাদেশে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির জন্য কাজ করবেন।’

শারজাহ’র বাংলাদেশ সমিতির সিনিয়র সহ সভাপতি শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে সাপোর্ট পেলে প্রবাসীদের প্রতিনিয়ত রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে। আমরা আশা করি সরকারের সাপোর্টের কারণে সিআইপির সংখ্যাটা আরও বৃদ্ধি পাবে।’

সরকার ঘোষিত সিআইপিরা দেশে বিনিয়োগ, ব্যবসা, ভ্রমণ, যাতায়াত ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পেয়ে থাকেন। এ সুযোগ সুবিধার থাকার কারণেও বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণে প্রতিযোগিতা বেড়েছে।

প্রবাসীরা বলছেন, সিআইপির আবেদনের পাশাপাশি নিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মীদেরও বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত করছেন প্রবাসীরা। সিআইপির সংখ্যা বাড়ালে দিনে দিনে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রতিযোগিতা আরও বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি হুন্ডি ও অবৈধ পন্থায় নিরুৎসাহিত হবেন প্রবাসীরা।

এসএইচ