নয়টি পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র চেষ্টা করছে পরমাণু অস্ত্রের মজুত বাড়াতে

ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র
বিদেশে এখন
0

বিশ্বে একদিকে যেমন সংঘাত বাড়ছে, অন্যদিকে বাড়ছে সমরাস্ত্রে বিনিয়োগ। পৃথিবীর নয়টি পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র একযোগে চেষ্টা করে যাচ্ছে পরমাণু অস্ত্রের মজুত বাড়াতে। সামরিক খাতে বিনিয়োগ অস্বাভাবিকহারে বাড়ার পাশাপাশি নতুন করে শুরু হয়েছে পরমাণু অস্ত্রের দৌড়। সুইডেনভিত্তিক অস্ত্র গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘সিপ্রি’র এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য।

পরমাণু শক্তিধর নয়টি দেশ শক্তিশালী বোমা আর দূরপাল্লার সমরাস্ত্রে এত বেশি মনোযোগী যে, এতে করে অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে গোটা বিশ্ব। অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় পৃথিবী এখন অনেক বেশি অস্থিতিশীল, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আবারও পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের শঙ্কা ক্রমশ বাড়ছে। সুইডেন ভিত্তিক অস্ত্র গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ সেন্টার এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য।

সংঘাত, অস্ত্র রপ্তানি আর সামরিক খাতে ব্যয় বাড়ানো ইস্যুতে সিপ্রির সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল, রাশিয়াসহ নয় পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের মধ্যে অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বেড়েছে। যদিও বিশ্বে পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা কমছে, কারণ যুক্তরাষ্ট্র আর রাশিয়া পুরনো পরমাণু অস্ত্রগুলো ধ্বংস করে ফেলছে। অন্যদিকে বহরে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন সমরাস্ত্র। অস্ত্রের মজুত কমানো বা নিয়ন্ত্রণে রাখার মতো কোন নীতিমালা না থাকায় অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়েছে এই মজুত।

সিপ্রি বলছে, মহামারির পর থেকে সমরাস্ত্রে বিনিয়োগ আর মজুত বাড়ছে। ইরান পরমাণু অস্ত্রের মজুত স্বীকার না করলেও সেই সক্ষমতা তেহরানের আছে বলেই বিশ্বাস করা হয়। এছাড়াও উত্তর কোরিয়া, পাকিস্তান আর ভারত নতুন পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে, যে দেশগুলো ’৯০ এর দশক থেকেই পরমাণু শক্তিধর।

এছাড়াও দেশের উত্তরাঞ্চলের মরুভূমি আর পর্বতে সাড়ে ৩০০ মিসাইল উৎক্ষেপণ কেন্দ্র তৈরি করছে চীন। গেলো বছর অভ্যন্তরীণভাবে নতুন একশ যুদ্ধাস্ত্র তৈরি করেছে বেইজিং। চীন আর ভারত দুই দেশই মিসাইলে যুদ্ধাস্ত্র সংযোজনের পরিকল্পনা করছে। মিসাইল আর যুদ্ধাস্ত্রকে আলাদা রাখার চিরায়ত নীতি থেকে সরে আসার পরিকল্পনা করছে দুই দেশই। ভারত তৈরি করছে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র।

সিপ্রির গবেষণা আরও বলছে, উত্তর কোরিয়ার কাছে ৪০ টি পরমাণু বোমা বানানোর মতো বিস্ফোরক মজুত আছে। পাকিস্তানও যুদ্ধাস্ত্র তৈরির কাঁচামাল মজুত করছে। চলছে আরও পরমাণু অস্ত্র তৈরির প্রস্তুতি। অন্যদিকে, ইসরাইলও টর্পেডো টিউব থেকে পরমাণু মিসাইল উৎক্ষেপণ সক্ষমতা অর্জন করেছে। এই সব দেশ, বিশ্বের মোট পরমাণু অস্ত্রের মাত্র ১০ শতাংশের দখলে।

বাকি ৯০ শতাংশই রয়েছে রাশিয়া আর যুক্তরাষ্ট্রের দখলে। এই দুই দেশের পরমাণু অস্ত্রের মজুত ৪ হাজারের বেশি। সিপ্রি বলছে, গেলো এক দশকে সারাবিশ্বে সামরিক খাতে বিনিয়োগ ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। এরমধ্যে ২০২৪ সালেই বেড়েছে নয় দশমিক চার শতাংশ, বা প্রায় তিন লাখ কোটি ডলার।

বিশ্লেষকরা বলছেন, পরমাণু হামলার ৮ দশক পেরিয়ে গেলেও এই সময় এসে কোন পরিস্থিতিতেই পরমাণু যুদ্ধ শুরু করা উচিত নয় কোন দেশের। ইসরাইল যদি অস্তিত্ব রক্ষায় পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করেও, তাতে শেষ রক্ষা হবে না বলেও মত তাদের।

এসএস