ভারতের আসামে প্রায় ১ কোটি মুসলিম রয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরের পর দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম অধ্যুষিত রাজ্য এটি। তবে কয়েকদিন পরপরই আসামের মুসলিমদের ওপর চড়াও হয় মোদি প্রশাসন। তাদের নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদের পাশাপাশি ঘটে বিতাড়িত করার ঘটনাও। এমনকি বাংলাদেশি অভিযোগে তাদের পুশ ইনও করা হয় প্রতিবেশী দেশে।
এবার ভারতে রাজ্য সরকার নির্বাচনকে সামনে রেখে আসামের মুসলিমদের ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রয়টার্স। যেখানে বলা হয়, আসামের মুসলিমরা বাংলাদেশি নাগরিক, এই অভিযোগ এনে তাদের বাড়ি-ঘর ভেঙে ফেলা হয়েছে। এ অবস্থায় তাঁবুতে মানবেতর জীবন পার করছেন আসামের অনেক মুসলিম।
আসামের মুসলিমরা বলেন, ‘আমাদের বাংলাদেশি বলা হচ্ছে। কীভাবে আমরা বাংলাদেশি? বাবা-দাদাসহ নথিপত্র আছে আমাদের কাছে। এখানকার নাগরিক আমরা। আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙে দিয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউ দেখতে আসেনি। গরিব লোকজন ক্যাম্পে দিন কাটাচ্ছে। এখানে পর্যাপ্ত খাবার নেই।’
২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অবনতি হয় বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কের। এর পর থেকেই সেখানকার মুসলিমদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ উঠে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে।
এছাড়াও ২০২১ সালে রাজ্য সরকার নির্বাচনে আসামে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৫০ হাজার মুসলিমকে উচ্ছেদ করেছেন। আবাস হারিয়েছে ৪ হাজার ৭০০ পরিবার। শুধুমাত্র গেলো একমাসে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মুসলিমের বাড়ি ঘর বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। উদ্ধার করেছেন প্রায় ১৬০ কিলোমিটার জমি।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘গরুর মাংস, মসজিদ, ও মুসলিম এসব কারণে আমাদের বাংলাদেশি বলা হয়। আমাদের সঙ্গে বৈষম্য করা হচ্ছে। কোন ভিত্তি ছাড়াই বাংলাদেশি বলে অভিযোগ তুলছে আমাদের ওপর। এখানে যদি কোনো বাংলাদেশি থাকে তবে তাদের বিতাড়িত করে দেন। সেক্ষেত্রে কোন সমস্যা নেই।’
যদিও আসাম মুখ্যমন্ত্রী মুসলিমদের ঘর ভাঙার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।