ক্রোয়েশিয়ার মিয়েত দ্বীপ। স্বচ্ছ নীল জলে ভেসে থাকা সবুজের সমারোহ। দেশটির দক্ষিণ-পূর্ব অ্যাড্রিয়াটিক দ্বীপপুঞ্জের অংশ।
এ মিয়েত দ্বীপের পশ্চিমে আছে জাতীয় উদ্যান। আর উদ্যানের চারপাশে গ্রেট লেক। তবে, লেক ও এর চারপাশের দৃশ্যই শেষ কথা নয়, গ্রেইট লেকের অগভীর তলদেশে লুকিয়ে আছে আরেক বিস্ময়। এর নাম বড় প্রবাল প্রাচীর।
প্রবাল পলিপ নামক ক্ষুদ্র এক জলজ প্রাণীর শক্ত কঙ্কাল থেকে তৈরি হয় এ প্রবাল প্রাচীর। যা সমুদ্রের অগভীর অঞ্চলে দেখা যায় এবং বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক জীবকে আশ্রয় দেয়, রক্ষা করে উপকূলও।
৬৫০ বর্গমিটার অঞ্চলজুড়ে বিস্তৃত এই প্রবাল প্রাচীরে গ্রুপার, অ্যাম্বারজ্যাক এবং বারাকুডার মতো বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণী বাস। তবে প্রকৃতির এ বিরল নিদর্শন আজ হুমকির মুখে। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে, সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী পিটার ক্রুজিচ এ প্রবাল প্রাচীরের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে কাজ করছেন।
তিনি জানান, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও ক্ষতিকর শৈবালের কারণে ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যাচ্ছে প্রাচীরটি।
পিটার ক্রুজিচ বলেন, ‘ন্যাশনাল পার্কের এই প্রবাল প্রাচীরটি ভূমধ্যসাগরের অন্যতম বড় প্রাচীর। গ্রিস ও ইতালিতেও এর দেখা পাওয়া যায়। কিন্তু এই প্রবালের তুলনায় তা অনেক ছোট।’
ক্রুজিচের পরীক্ষা থেকে আরও জানা গেছে, একটি দ্রুত-বর্ধনশীল শৈবাল যা উষ্ণ পানিতে ভালোভাবে বেড়ে ওঠে, সেটিই এখন এ শৈবাল প্রাচীরের জন্য অতিরিক্ত হুমকি সৃষ্টি করছে। এটি প্রায়ই প্রবালের ওপর গজিয়ে ওঠে এবং এর বাস্তুসংস্থানকে বিঘ্নিত করে ফেলে।
ক্রুচিজ বলছেন, পানির তলদেশে তাপমাত্রা ক্রমেই বাড়তে থাকায় ক্ষতিকর এ শৈবালের বৃদ্ধি ঠেকানো আরও কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এটা প্রায় ৬৫০ বর্গমিটার জায়গা নিয়ে গঠিত। এর গায়ে অনেক গর্ত থাকে, সেখানে মাছ বাস করে। কিছু ক্ষতিকর শৈবালের কারণে প্রবাল প্রাচীরের কারণে এটি অবশ্যই হুমকির মুখে।’
বিরল এ নিদর্শনটি রক্ষা করতে, মাছ ধরা বন্ধ রাখা, অনুমোদনবিহীন ডাইভিং নিষিদ্ধকরণ, নৌযান চলাচলে সীমাবদ্ধতা, এবং প্রবেশাধিকার সীমিত করেছে পার্ক কর্তৃপক্ষ। তবে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে শৈবাল প্রাচীরটি বাঁচানো কঠিন হবে বলছেন সংশ্লিষ্টরা।