দিল্লির বায়ুমান সূচক ৭০০ ছাড়ালো; বিমানবন্দরে সতর্কতা

দিল্লির বায়ুমান সূচক মাত্রা ছাড়ানোর কারণে বিমানবন্দরে সতর্কতা জারি করা হয়েছে
বিদেশে এখন
0

ভারী ধোঁয়াশার কবলে ভারতের রাজধানী দিল্লি। আজ (শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর) বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত নগরীটিতে বায়ুমান সূচক ৭০০ পার করে যায়। দৃষ্টিসীমা শূন্যের কাছাকাছি নেমে যাওয়ায় সতর্কতা জারি করেছে দিল্লি বিমানবন্দর। দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও বাতাসের মান রক্ষায় সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধী দল ও পরিবেশবিদরা।

তীব্র ধোঁয়াশায় আজ ঘুম ভাঙে দিল্লিবাসীর। দিন শুরু হয় বাতাসের সামগ্রিক মান ‘গুরুতর’ পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ার মধ্য দিয়েই।

ভারতের কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের তথ্য, স্থানীয় সময় সকাল ৮টার দিকে সামগ্রিক বায়ু মান সূচক ছিল ৩৯০, অর্থাৎ খুব খারাপ। তবে এলাকাভেদে রাজধানীর কিছু অংশে বাতাসের মান পৌঁছায় গুরুতর পর্যায়ে। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি ছিল আনন্দ বিহার এলাকায়, বায়ু মান সূচক ৪৩৫। যদিও সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বিশ্বব্যাপী বায়ু মান তথ্য সরবরাহকারী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার বলছে, বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত নগরীটিতে বায়ুমান সূচক পৌঁছায় ৭৪৬-এ। নিজেদের স্বার্থেই বাতাসের ন্যূনতম মান ধরে রাখার প্রতি জোর দিচ্ছেন পরিবেশবিদরা।

পরিবেশবিদদের মধ্যে একজন বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তুলনায় আমাদের দেশের নিজস্ব বায়ু মান সূচক উল্লেখযোগ্য রকমের কম। পরের ধাপে যাওয়ার আগে নিজেদের সূচকই অর্জনের চেষ্টা করছি আমরা। দুর্ভাগ্যজনক হলো, আমরা নিজেরাই নিজেদের সূচক মানছি না।’

আরেক পরিবেশবিদ বলেন, ‘বাতাসের মান পর্যবেক্ষণে বেসরকারি নজরদারি নেই বললেই চলে, থাকলেও খুব কম। ২৯০টি শহরে ৫৬০টির মতো যন্ত্র বসানো হলেও সবই সরকারি।’

আরও পড়ুন:

ধোঁয়া আর কুয়াশার ঘনত্বে রাজধানী বিভিন্ন এলাকায় ভোর থেকেই দৃষ্টিসীমা শূন্যের কাছাকাছি। এ অবস্থায় বিমান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও, যাত্রীদের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা জারি করে দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বার্তা দিয়ে ফ্লাইটের হালনাগাদ সময়সূচির জন্য সংশ্লিষ্ট বিমান সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগের অনুরোধ করে।

দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও বাতাসের মান রক্ষায় সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে উত্তেজনার আঁচ পৌঁছেছে ভারতের রাজনীতিতেও। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্ধারিত বাতাসের মানবিষয়ক নির্দেশনা সতর্কতা মাত্র, বাধ্যতামূলক কিছু নয়, পার্লামেন্টে সরকারের এমন বক্তব্যে ক্ষুব্ধ বিরোধী দল। সতর্কতা কিংবা বৈশ্বিক মানের বিষয় নয়, বরং বাতাসের মানের ক্রমশ অবনতির মাশুল গোনার পরিস্থিতিতে ভারত নেই বলে মত সংশ্লিষ্টদের।

ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, ‘বায়ুদূষণে আমাদের জনগণের যে ক্ষতি হচ্ছে, তা নিয়ন্ত্রণে আমরা সহযোগিতা করতে চাই এবং এ বিষয়ে এই কক্ষে উপস্থিত সবাই একমত। আমার মনে হয়, এখন সরকারের এ নিয়ে একটি পরিকল্পনা দাঁড় করানো উচিত।’

ভারতের আবহাওয়া বিভাগ বলছে, ধীর বাতাসে দূষিত বায়ুকণা ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি আটকে থাকায় এমন পরিস্থিতি। আভাস, মাঝারি ধোঁয়াশা অব্যাহত থাকবে এবং আরও খারাপ হবে বাতাসের মান। শীতকালীন ধোঁয়াশার আরেকটি চ্যালেঞ্জ এগিয়ে আসতে থাকায় অপ্রয়োজনে বাইরে না বের হতে এবং স্বাস্থ্য সতর্কতা মেনে চলতে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এসএইচ