নতুন ধর্মগুরুর অপেক্ষায় প্রহর গুণছেন রোমান ক্যাথলিক চার্চের ১৪০ কোটি ভক্ত ও অনুসারী। রীতি মেনে ভেঙে ফেলা হচ্ছে সদ্য প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের আংটি ও সিলমোহর। প্রথম পোপ সেন্ট পিটারের সম্মানার্থে ধর্মগুরুর এই বিশেষ আংটিকে বলা হয় ফিশারম্যানস রিং।
খ্রিস্টানদের ধর্মগুরু নির্বাচনের প্রক্রিয়ার নাম ‘কনক্লেভ’। যেখানে যোগ দিতে এরই মধ্যে ভ্যাটিকান পৌঁছেছেন ৭০টি দেশের ১৩৩ জন কার্ডিনাল। অসুস্থতার জন্যে বাদ পড়েছেন দুজন। বরাবরের মতো কনক্লেভের জন্য ব্যবহার করা হবে সিস্টাইন চ্যাপেল।
এতটাই গোপনীয় এই প্রক্রিয়া যে পরবর্তী ধর্মগুরুর নাম ঘোষণার আগ পর্যন্ত মোবাইল, ইন্টারনেট, সংবাদপত্র থেকে দূরে থাকতে হবে কার্ডিনালদের। বন্ধ থাকবে বাইরের সাথে সব ধরনের যোগাযোগ। কার্ডিনালদের মধ্যে যাদের বয়স আশির বেশি তারা ধর্মসভা পর্যন্ত চ্যাপেলের থাকার অনুমতি পেলেও অংশ নিতে পারবেন না নির্বাচন প্রক্রিয়ায়।
সর্বোচ্চ ১৩ দিনের মধ্যে ঘোষণা করতে হবে নতুন পোপের নাম। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন হবে দুই তৃতীয়াংশ কার্ডিনালের সমর্থন। নির্ধারিত সময়ে সমাধান না এলে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে হবে রান অফ নির্বাচন। কিন্তু সেখানেও জয়ের জন্য দুই তৃতীয়াংশের সমর্থন আদায় করতে হবে প্রার্থীকে।
কনক্লেভ চলাকালে এই কার্ডিনালরা আহার-বিহার ও প্রার্থনা করবেন একসাথে। এসময় কয়েক দফায় চলবে আলোচনা-পর্যালোচনা ও ভোটগ্রহণ। নির্বাচনের জন্য বুধবার এক দফা এবং পরবর্তী প্রতিদিন চার দফায় চলবে ব্যালট গ্রহণ। পরবর্তী পোপ নির্বাচিত হওয়ার আগ পর্যন্ত চলতে থাকবে এ প্রক্রিয়া।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন পোপ হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন ইতালির কার্ডিনাল পিয়েতরো পারোলিন ও ফিলিপিনসের আন্তনিও তাগলে।
নতুন পোপের নাম ঘোষণার প্রক্রিয়াটিও অভিনব। ব্যালট জমা পড়ার পর সকালে ও বিকেলে এগুলো পোড়ানোর রীতি আছে। কেউ না জিতলে রাসায়নিক মিশিয়ে পোড়ানো হবে ব্যালটগুলো। ভ্যাটিকানের ছাদ দিয়ে বের হবে কালো ধোঁয়া। আর যদি ধোঁয়ার রং স্বাভাবিকের মতো সাদা হয়, তবে ধরে নিতে হবে নতুন ধর্মগুরু পেয়ে গেছেন রোমান ক্যাথিলিকরা।