যুদ্ধ বন্ধে আপসহীন পুতিন, ট্রাম্পকেও মনে করছেন বন্ধু

নরেন্দ্র মোদি, ভ্লাদিমির পুতিন
ইউরোপ
বিদেশে এখন
0

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে আপসহীন অবস্থানে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউরোপীয় দেশগুলো কিয়েভে সেনা পাঠালে তাদের ওপর হামলা করার হুঁশিয়ারি তার। তার দাবি, পশ্চিমা সেনাদের ওপর ওই হামলা হবে বৈধ। চীন সফরের পর দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জন উনকে পাশে পেয়ে এ বিষয়ে আরও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ রুশ প্রেসিডেন্ট। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকেও নতুন নিষেধাজ্ঞার লক্ষণ না দেখায় ট্রাম্পকেও বন্ধুই মনে করছেন তিনি। এ পরিস্থিতিতে সহসাই থামছে না রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ- এমনটাই মত বিশ্লষেকদের।

গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ওয়াশিংটন ডিসিতে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈঠকের পর আশার আলো ফোঁটে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের। তবে সময়ের সঙ্গে ক্রমেই ফিকে হচ্ছে সেই সম্ভাবনা।

ইউক্রেনে ইউরোপের দেশগুলো সেনা সদস্য পাঠালে যুদ্ধের তীব্রতা আরও বাড়ার হুমকি দিয়েছে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। হুঁশিয়ারি দেন, ইউক্রনে পশ্চিমা সেনা পাঠালে তাদের ওপর বৈধ হামলা করতে পারবে মস্কো। এছাড়াও যুদ্ধ বন্ধে আলোচনায় বসতে হলে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টকে অবশ্যই রাশিয়ার মাটিতে আসতে হবে বলেও শর্ত দেন তিনি।

যুদ্ধ বন্ধে পুতিনের বেধে দেয়া শর্তে ইউক্রেন রাজি হলেই কেবল চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব বলে জানান তিনি। অপরদিকে ইউক্রেনসহ ইউরোপীয় নেতারা যেখানে পুতিনের শর্ত মেনে নিতে কোনভাবেই রাজি নন। এ পরিস্থিতিতে ইউক্রেন ইস্যুতে অনড় রাশিয়া।

যুদ্ধ বন্ধে রুশ প্রেসিডেন্টের আপসহীন এ অবস্থানের পেছনে বেশ কিছু ফ্যাক্টর কাজ করছে। এ নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি। যেখানে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে চীন সফরে যান পুতিন। যেখানে বন্ধুরাষ্ট্র চীন, ভারত ও উত্তর কোরিয়ার নেতাদের সঙ্গে এ ইস্যুতে আলোচনা করেন তিনি। যেখান থেকে বেশ ইতিবাচক সাড়া পেয়েছেন পুতিন।

এছাড়াও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও মিত্রপক্ষ হিসেবেই দেখছেন পুতিন। আলাস্কা সম্মেলনে ট্রাম্পই পুতিনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এতে করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়। বিফলে যায়, ট্রাম্পের কাছ থেকে পুতিনকে আলাদা করার ইস্যুতে ইউরোপীয় নেতাদের কৌশল।

আলাস্কা সম্মেলনে নির্ধারিত সময়ে যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হলে মস্কোর ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে তার বেঁধে দেয়া সময় পার হলেও সে বিষয়ে কোন মাথা ব্যথা নেই হোয়াইট হাউসের। আর এতে করে পুতিনের আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে গেছে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের উদ্যোগের প্রশংসা করেন পুতিন। যদিও এখনও পর্যন্ত তার এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেননি তিনি। তবে এতে সম্মত হওয়ার কোন লক্ষণও নেই তার।

পুতিনের ভাষায়, সুড়ঙ্গের শেষ বাতিটি যতটা আবছা ঠিক ততটাই অধরা ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়টি। ইউক্রেনসহ ইউরোপীয় সব দেশ একজোট হয়ে যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টা করলেও বন্ধুরাষ্ট্রগুলোকে সঙ্গে নিয়ে সে বিষয়ে আপসহীন পুতিন। তাই বিশ্লেষকদের ধারণা, সহসাই বন্ধ হচ্ছে না রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ।

এসএস