মানব পাচার মামলায় আন্তর্জাতিক চক্রের মূলহোতাসহ ৫ জন গ্রেপ্তার

প্রতীকী ছবি
আইন ও আদালত
1

জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর হাজারীবাগ থানার মানব পাচার মামলায় আন্তর্জাতিক চক্রের মূলহোতা ও ৪ সহযোগীসহ মোট ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-২। আজ (সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তির তথ্যানুযায়ী, গ্রেপ্তারকৃতরা হলো-আন্তর্জাতিক মানব পাচার চক্রের মূলহোতা আমিনুল ইসলাম (৪৬), সহযোগী আব্দুল হাকিম (৫৬), মো. নূর ইসলাম(৩১), আসাদুজ্জামান (৩৫) ও মো. শাহরিয়ার শেখ মুরাদ (৪২)। ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ১১ নম্বর সেক্টর থেকে র‌্যাব-২ তাদের গ্রেপ্তার করে।

এজাহারের বরাতে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভিসা এবং পাসপোর্ট জালিয়াতির মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর কথা বলে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সাধারণ মানুষ বিশেষ করে বেকার যুবকদের টার্গেট করে বিগত কয়েক বছরে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করে আবদুল্লাহ-আমিনুলের মানব পাচার চক্রটি।

দীর্ঘদিন ধরে তারা এসব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিল। ইউরোপে পাঠানোর কথা বলে জন প্রতি ২০/২৫ লাখ টাকা নেয় মানব পাচার চক্রটি। বাংলাদেশ থেকে আমিনুল এবং লিবিয়া থেকে আবদুল্লাহ মানব পাচারের এ কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করে থাকে।

পাসপোর্ট জালিয়াতির মাধ্যমে প্রথমে ভূয়া ভিসা তৈরি করে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাঠায় চক্রটি। ইউরোপে নিয়ে যাওয়ার রুট হিসেবে চক্রটি দীর্ঘদিন প্রথমে মিসর এবং পরবর্তীতে, মিসর হতে লিবিয়া হয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ঝুঁকিপূর্ণ ও অবৈধ নৌ রুট ব্যবহার করে আসছে।

অন্যদিকে মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামি আমিনুল ইসলাম (৪৬) একজন মানবপাচারকারী। মামলার বাদীর ভাই ভিকটিম জাহিদ হোসেনকে (৪২) প্রধান আসামি ইতালি নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ২০ লাখ টাকা দাবি করে। ভিকটিম তার কথামত বিভিন্ন সময় টাকা প্রদান করে। পরবর্তীতে ২০২৫ সালের ১৩ জুলাই প্রধান আসামি আমিনুলের নির্দেশে ভিকটিমকে মদিনা হয়ে মিশরে নিয়ে যায়।

তারপর অজ্ঞাত আসামিরা তাকে মিশরে জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবি করে। এ ঘটনায় বাদী ডিএমপির হাজারীবাগ থানার মামলা নং ৯, -তারিখ-০৭/০৯/২৫ ইং, ধারা- ৬/৭/৮/১০ মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন-২০১২ তৎসহ ৪০৬/৪২০ পেনাল কোড ধারায় মামলা দায়ের করেন।

জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) বিষয়টি নজরদারি করে আসছিল এবং মানব পাচার মামলা দায়েরের পর এনএসআইয়ের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ৭ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-২ ও হাজারীবাগ থানা পুলিশের যৌথ আভিযানিক দল আমিনুল ও তাদের ৪ সহযোগীসহ মোট ৫ জনকে উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত প্রধান আসামী আমিনুলের বাসা থেকে গ্রেফতার করে।

এসময় তাদের কাছ থেকে ৯টি পাসপোর্ট, ১০টি স্মার্টফোন, ১টি বাটন ফোন ও মানব পাচারের মাধ্যমে অর্জিত নগদ ১ কোটি ৫৬ লাখ ২৬ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই বাছাই করে তার সহযোগী মানবপাচারকারী চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানানো হয়।

এএইচ