ঈদে মিলাদুন্নবী কী ও কেন?
আরব সমাজের ‘আইয়ামে জাহেলিয়া’ বা অন্ধকার যুগ থেকে মানবকুলের মুক্তি ও আলোর পথ দেখাতে আল্লাহ তা’আলা আজকের দিনেই রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে পৃথিবীতে শেষ নবী ও রাসূল হিসেবে প্রেরণ করেন। যার জীবনাদর্শই (সুন্নাহ) পরবর্তীতে হয়ে ওঠে ইসলামের মূল ভিত্তি, মুসলিম উম্মাহর পাথেয়।
৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের এ দিনে মানবজাতির রহমত স্বরূপ মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) জন্মগ্রহণ করেন। তিনি আরবের মক্কা নগরের সম্ভ্রান্ত কুরাইশ বংশের আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুল মুত্তালিবের ঘরে, মা আমিনার কোলে জন্ম নেন। প্রতি হিজরি বর্ষের তৃতীয় মাস ‘রবিউল আউয়াল’-এর ১২ তারিখটি তাই মুসলমানদের ঘরে ঘরে নবী মুহাম্মদের জন্মক্ষণকে পবিত্র দিন হিসেবে পালন করা হয়।
ঈদে মিলাদুন্নবীর প্রচলন যেভাবে শুরু
ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের প্রচলন শুরুর ইতিহাস নিয়ে রয়েছে নানা মতান্তর। অনেকে বলে থাকেন ঈদে মিলাদুন্নবীর প্রচলন শুরু হিজরি ৪র্থ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে। যখন আরবিলের বাদশাহ মুজাফফর উদ্দিন কুকুবুরি (৬০৪ হিজরি) জাঁকজমকপূর্ণভাবে রাসুল (সা.) এর জন্মদিন উদযাপন শুরু করেন, যা পরবর্তীতে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে জনপ্রিয়তা লাভ করে। এ উৎসবের আনুষ্ঠানিক প্রচলন হয় ৭ম হিজরি শতাব্দী থেকে।
আরও পড়ুন:
মুসলিম মনীষীরা ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপনকে যেভাবে দেখেন
ঈদে মিলাদুন্নবী প্রচলনের কারণ ও ইতিহাস নিয়ে গবেষকদের ধারণা, ঈদে মিলাদুন্নবীর উৎপত্তি ও বিকাশে আরবিলের বাদশাহ মুজাফফর উদ্দিন কুকুবুরির বিশেষ ভূমিকা ছিল। তিনি তৎকালীন ইরাকে ব্যাপক অর্থ ব্যয় করে রাসুল (সা.) এর জন্মদিন উদযাপন শুরু করেন, যা পরবর্তীতে মুসলিম বিশ্বে একটি উৎসব হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করে।
ঈদে মিলাদুন্নবীর (সা.) গুরুত্ব ও তাৎপর্য
ইসলামী বিশেষজ্ঞদের মতে, এ দিনটি উদযাপনের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে রাসুল (সা.) এর প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা বৃদ্ধি পায় এবং এটি একটি সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে।
ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ!
জানা গেছে, মিলাদুন্নবীর ওপর সর্বপ্রথম গ্রন্থ রচনা করেন আবুল খাত্তাব ওমর ইবনে হাসান ইবনে দেহিয়া আল কালবী। তবে ঈদে মিলাদুন্নবী প্রচলন ও ইসলামি শরিয়তের আলোকে এর বৈধতা নিয়ে ইসলামী চিন্তাবিদদের মধ্যে অনেক বিতর্ক ও মতপার্থক্য রয়েছে।