বৃদ্ধাশ্রমে থাকা মায়েদের মনের আকাশে কখনও রোদ ওঠে না। তাদেরকে প্রিয় পরিবার ছেড়ে অচেনা মানুষের সঙ্গে থাকতে হয়। যেখানে কেউ খোঁজও নিতে আসেন না। তারপরও মায়েদের মনে সন্তানদের জন্য ভালোবাসার কমতি নেই।
জীবনের শেষবেলা নিয়ে এক বৃদ্ধ বলেন, ’ছেলে যখন-তখন খারাপ ব্যবহার করতো। পরে ছেলের বউও যাচ্ছেতাই ব্যবহার শুরু করে। এজন্য বাধ্য হয়ে বৃদ্ধাশ্রমে চলে আসছি।’
সাইফুল নামের এক প্রবীণ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ’এই প্রবীণ নিবাসেই যেন আমার মৃত্যু হয়। সন্তানরা যোগাযোগ করলেও আর ফিরে যাবো না।’
প্রবীণ এই মানুষগুলোর আজ কোন আপনজন নেই। সামর্থ্য থাকার পরও তারা পরিবারের কাছে বোঝা হয়ে গেছেন। এক বৃদ্ধা নারী বলেন, ’পরিবারের সঙ্গে থাকতে চেয়ছিলাম কিন্তু আমার কপালে নেই। এভাবে থাকবো, কোনোদিন ভাবিনি! তবে আমরা এখানে সবার কষ্ট ভাগ করে নিয়ে একসঙ্গে থাকার চেষ্টা করি।’
নানা কারণে যারা নিজ পরিবারে থাকতে পারেন না তাদের জন্য ১৯৮৭ সালে রাজধানীর উত্তরায় বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। পরে ১৯৯৫ সালে গাজীপুরের মনিপুরে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে এখানে ১০০ জন পুরুষ ও ৭৮ জন নারী অবস্থান করছেন।

গাজীপুরের বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্র। ছবি: এখন টিভি
গাজীপুরের বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রের হোস্টেল সুপার হাবিবা খন্দকার বেলি বলেন, সন্তানদের মাঝে নৈতিক শিক্ষা না থাকায় এই মানুষগুলো আজ পরিবার ছেড়ে বৃদ্ধাশ্রমে থাকছেন। এজন্য আমাদের সন্তানদের পিতামাতার প্রতি আরও দায়িত্ববান হতে হবে।
বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল জাহিদ মুকুল বলেন, যারা পরিবারে থাকতে পারছেন না। আবার যাদের সামর্থ্য নেই তাদের জন্য এই পুনর্বাসন কেন্দ্র। আমরা তাদেরকে সাধ্যমতো সুযোগ-সুবিধা দিয়ে এখানে রাখার চেষ্টা করছি।