গরম বাড়ায় বাড়ছে এসি বাসের চাহিদা

চট্টগ্রাম
দেশে এখন
0

বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রভাব পড়ছে দেশের পরিবহন খাতেও। আরামদায়ক ভ্রমণ আর ক্লান্তি এড়াতে এখন স্বল্প দূরত্বের এসি আর বিলাসবহুল পরিবহন বেছে নিচ্ছেন যাত্রীরা। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানান, গেলে কয়েক বছরে দ্বিগুণ হয়েছে এসি বাসের চাহিদা, ফলে বিনিয়োগও বেড়েছে কয়েকগুণ।

সারাদেশে এসি বাসের ওপর নির্ভরতা বাড়ছে। ভ্রমণে ক্লান্তিবোধ এড়াতে দূরের যাত্রায় দিনকে দিন বাড়ছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ও বিলাসবহুল বাসের চাহিদা।

যাত্রীরা বলেন, 'তাপপ্রবাহ থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য এসি বাসের বিকল্প নেই। সবসময় ব্যস্ততার মধ্যে থাকতে হয়। তাই জার্নিটা যেন আরামদায়ক হয় তাই এসি বাসে চড়া। নয়তো কাজের ওপর এর প্রভাব পড়বে।'

বাস মালিকরা জানান, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে এসি বাসের চাহিদা দ্বিগুণ বেড়েছে। বর্তমানে সারাদেশে অন্তত ৬ হাজার এসি বাসে চলাচল করছে। যেখানে চালক, হেলপার, সুপারভাইজারসহ কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার মানুষের। আর এই খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা।

শ্যামলী এন আর ট্রাভেলসের জেনারেল ম্যানেজার বাবুল আহমেদ বলেন, 'বিমানে চড়ে যারা অভ্যস্ত তারা এই বিলাসবহুল গাড়িগুলোকে বেছে নেয়। আবার যাদের ব্যক্তিগত গাড়ি রয়েছে তারাও এ গাড়ি ব্যবহার করে। এজন্য এসি গাড়ির চাহিদা বাড়তেছে।'

|undefined

চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি মো. খোরশেদ আলম বলেন, 'কম খরচেই এ গাড়িগুলোর বডি তৈরি করা যাচ্ছে। যে কারণে অনেক ছোট কোম্পানিও অল্প টাকা পুঁজি নিয়ে ব্যবসায় নেমেছে।'

এখন কেবল দূরপাল্লা নয়, স্বল্পপাল্লা এমনকি মহানগর পর্যায়েও জনপ্রিয়তা বাড়ছে এসি বাসের। নগরী থেকে আশপাশের জেলা, উপজেলা পর্যায়েও চালু হয়েছে এসি বাস। সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে স্বল্প মূল্যে চেসিস কিনে দেশেই প্রস্তুত হচ্ছে এসি বাসের বডি। তাই ভাড়ায়ও থাকছে সাধ্যের মধ্যে।

জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী বলেন, 'এখানে ড্রাইভার-কন্ট্রাক্টাররা আয় করে দেয়। তাই ব্যবসার জন্য আলাদাভাবে সময় বিনিয়োগ করতে হয় না। যার কারণে স্বল্প লাভ হলেও অনেকেই এ ব্যবসা করে যাচ্ছে।'

দেশে এখন প্রায় সব রুটেই এসি বাস চলাচল করলেও সবচেয়ে বেশি চলে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে। বলা হয়ে থাকে দেশের এসি বাসের বেশিরভাগই চলে এই রুটে।

পরিসংখ্যান বলছে দেশে যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ হয়, তার ১৫ শতাংশ হয় পরিবহন খাত থেকে। বাসে এসির ব্যবহার ভেতরের পরিবেশকে শীতল রাখলেও বাইরের পরিবেশকে উত্তপ্ত করছে। তাই পরিবহনের কারণে পরিবেশ দূষণ কমাতে ইলেকট্রিক ভেহিক্যাল হতে পারে একটি দারুণ সমাধান। তবে অবকাঠামো গড়ে না উঠায় অনেক পরিবহন ব্যবসায়ী এ খাতে বিনিয়োগ করতে পারছেন না। সরকারি প্রণোদনা পেলে ইলেকট্রিক ভেহিক্যাল হবে আগামীর পরিবহন এমনটা বলছেন সংশ্লিষ্টরা।