গতকাল (রোববার, ১০ আগস্ট) রাতে এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি জানান ছাত্রনেতারা।
বিবৃতিতে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট হাজারো শহিদ এবং আহত ভাইবোনের রক্তাক্ত আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে সংঘটিত ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ এবং শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী থেকে মুক্ত করেছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জনগণ বিদ্যমান শোষণ-নিপীড়নমূলক পুলিশ, আদালত, আইন-সংবিধান তথা পুরোনো ব্যবস্থার দ্বারা চূড়ান্তভাবে অস্বীকার করে নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সর্বাত্মক রূপের মধ্য দিয়ে এটি এই অঞ্চলে ঘটা অন্য সব গণঅভ্যুত্থানকে ছাড়িয়ে সবচেয়ে বেশি অগ্রসর হয়েছে উল্লেখ করে বলা হয়, চব্বিশের জুলাই ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের মতো সামরিক শাসনকে মেনে নেয়নি, আবার নব্বইয়ের মতো কেবলমাত্র ব্যক্তি স্বৈরাচারীর অপসারণকেই মূল লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করেনি বরং রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙ্ক্ষার মধ্য দিয়ে গণবান্ধব রাষ্ট্র গঠনের বৈপ্লবিক চেতনাকে জাগ্রত করেছে। স্বাভাবিকভাবেই জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুসারে নতুন কল্যাণমূলক, গণবান্ধব রাষ্ট্র তৈরির দায়িত্ব পালনে অগ্রসর ভূমিকায় হাজির হয় গণঅভ্যুত্থানের ছাত্রনেতারা, যাদের ডাকে বিশ্বাস স্থাপন করে জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।
আরও পড়ুন:
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ছাত্রনেতারা প্রথমেই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া সব দল, সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে নতুন যাত্রা শুরু করার উদ্দেশে জাতীয় সরকারের প্রস্তাব করে। কিন্তু পুরোনো ব্যবস্থার সুবিধাভোগ করতে উৎসুক রাজনৈতিক দলগুলোর একটি বৃহৎ ও শক্তিশালী অংশ এ প্রস্তাবকে অস্বীকার করে এবং নতুন গণবান্ধব রাষ্ট্র গঠনের জনআকাঙ্ক্ষা থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে। এমতাবস্থায় নির্দলীয় এনজিও সমর্থিত অ্যাক্টিভিস্ট, বিশেষজ্ঞ ও সুশীল পরিসরের নেতৃত্বকে নিয়ে ছাত্র নেতৃত্ব অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রক্রিয়াতেই দুটি প্রতিবিপ্লবী ঘটনার উল্লেখ করে বলা হয়, পুরনো শোষণ-নিপীড়নমূলক সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র গণঅভ্যুত্থানকে সমর্থনের অভিনয় করে আলোচনার টেবিলে নিজেদের জায়গা করে নেয় এবং নিজেদের এজেন্ডা অনুসারে সরকার গঠন প্রভাবিত করে। এছাড়া সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্রের প্রতারণামূলক ছলনা-সুশীল নেতাদের আপোষকামিতা ও সাহসের অভাবে প্রভাবিত হয়ে ছাত্র নেতৃত্ব পুরোনো সংবিধান, পুলিশ, আদালতসহ বিদ্যমান শোষণ-নিপীড়নমূলক কাঠামোকে মেনে নিয়েই অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করে এবং এর ফলশ্রুতিতে প্রথমেই গণঅভ্যুত্থানে প্রকাশিত গণআকাঙ্ক্ষা বাধাগ্রস্ত হয় বলেও জানানো হয়।
এ বিবৃতিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০ জন শিক্ষার্থী সই করেছেন।