জলবায়ু সম্মেলনে তরুণদের শক্তিশালী ভূমিকা রাখার দাবি

বাংলাদেশ ইয়ুথ কপ ফর জাস্ট ট্রানজিশন গোলটেবিল আলোচনা
দেশে এখন
0

ব্রাজিলের বেলেমে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৩০তম জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন। এ সম্মেলনকে সামনে রেখে আয়োজন করা হয় ‘বাংলাদেশ ইয়ুথ কপ ফর জাস্ট ট্রানজিশন’ গোলটেবিল আলোচনা। অনুষ্ঠানে তরুণ জলবায়ু কর্মীরা বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলনে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে তরুণদের আরও যুক্ত করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কৃষি, পরিবেশ, খাদ্য, জীববৈচিত্র্যসহ নানা ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ছে বাংলাদেশের মত দেশগুলো। তরুণ সমাজকে দক্ষ হিসাবে গড়ে তুলতে পারলে জলবায়ু পরিবর্তনের যে সংকট তা মোকাবেলা করা সম্ভব হবে বলে জানান তারা।

অনুষ্ঠানে বরগুনা থেকে আসা তরুণরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রান্তিক অঞ্চলে যে ধরনের ক্ষতি হচ্ছে তা পুরোপুরি তুলে ধরা হচ্ছে না। উপকূল অঞ্চলের মানুষের যে সংকট তা বিশ্ব দরবারে পৌঁছানোর কোনো সুযোগ পাচ্ছে না প্রান্তিক জলবায়ু কর্মীরা। তাই প্রান্তিক পর্যায়ে যারা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে হুমকির মুখে রয়েছে তাদের দিকে নজর আরও বাড়ানোর তাগিদ দেন বক্তারা।

বিভিন্ন সংগঠনের পরিবেশ কর্মীরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে নারী ও শিশুরা চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। বসতবাড়ি থেকে শুরু করে কৃষি জমি হারাচ্ছে মানুষ। এ ক্ষয়ক্ষতির অর্থ পাচ্ছে না ক্ষতিগ্রস্ত মানুষরা। এতে দারিদ্র্যতা বাড়ছে। পাশাপাশি জলবায়ু উদ্বাস্তুর হারও বাড়ছে দেশে। কিন্তু এ পুরো সংখ্যাটা কত তার কোনো সঠিক তথ্যও মিলছে না। মাঠ তথ্যের অভাবে বিশ্ব দরবারে জোড়ালোভাবে দাবি তোলা যাচ্ছে না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে শুধু স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে এমন না, মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকিও বাড়ছে বলে দাবি করেন তরুণরা। তারা বলনে, সংকট মোকাবেলায় বিশ্বব্যাপী নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও সবুজ কর্মসংস্থানে যুবদের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে হবে। যেসকল দেশ এর জন্য দায়ী তাদের কাছ থেকে কীভাবে সহজে ক্ষয় ক্ষতির অর্থ পাওয়া যায় নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে জোরালো দাবি তুলতে হবে তরুণদের মাধ্যমে। পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার আরো বাড়তে হবে জলবায়ু প্রভাব মোকাবেলায়।

অনুষ্ঠানে সাংবাদিকরা বলেন, জলবায়ু তহবিল নিয়ে আলোচনা হলেও কীভাবে সেই অর্থ মিলবে তার রূপরেখা তৈরি হয়নি। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কি ধরনের ক্ষতি হচ্ছে তা নিয়ে পর্যাপ্ত গবেষণা নেই। বিশ্ব দরবারে কিংবা জলবায়ু সম্মেলনে সঠিক তথ্য তুলে ধরা সম্ভব হচ্ছে না।

সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট রিসার্চের সহকারী পরিচালক রউফা খানম বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কর্মসংস্থানের সংকট দেখা দিচ্ছে। যার ভুক্তভোগী যুব সমাজও। তবে তাদের যদি দক্ষ করে কাজে লাগানো যায় তাহলে এ সংকট সমাধান করা সম্ভব। নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে তরুণদের কাজে লাগাতে হবে।’

অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের নাজমুল আহসান বলেন, ‘তরুণদের যুক্ত করতে আগামী বছর থেকে বাংলাদেশ ব্যাপী আরও বড় আকারে ইয়ুথ কপ আয়োজন করা হবে। তবে তরুণরা এগিয়ে এলেই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা করা সহজ হবে।’ অনুষ্ঠানে ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়াসহ বিভিন্ন দেশের জলবায়ু কর্মীরাও উপস্থিত হয়েছিলেন।

এএইচ