সন্ধ্যায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের জরুরি বৈঠক

ঐকমত্য কমিশনের সভা
দেশে এখন
0

স্বাক্ষরের আগে চূড়ান্ত জুলাই জাতীয় সনদ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। ১৭ অক্টোবর দলগুলো এ সনদে সই করবে। সনদে স্বাক্ষর করার আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসতে যাচ্ছে কমিশন। আজ (বুধবার, ১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রীয়াজের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এসব কথা বলা হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, বৈঠকে অংশ নিতে প্রতিটি দলের দুজন প্রতিনিধির নাম বিকেল ৪টার মধ্যে কমিশনের কাছে পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে পাওয়া প্রতিনিধিরাই শুধু বৈঠকে অংশ নেবেন।

অন্যদিকে ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে জাতীয় সংসদ ভবনে জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে। সনদে এর পটভূমি ব্যাখ্যা করে সংস্কারের ৮৪ দফা তুলে ধরা হয়েছে। এতে, রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকারনামার পর স্বাক্ষরের জায়গা রাখা হয়েছে।

শুক্রবার জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ স্বাক্ষরের প্রস্তুতি নিচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ৩৩টি রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছে চূড়ান্ত জুলাই জাতীয় সনদ পাঠিয়েছে ঐকমত্য কমিশন।

গণঅভ্যুত্থানের অংশীজনদের সাথে আট মাস ধরে আলোচনার পর ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য হয়। এগুলো নিয়েই তৈরি হয় চূড়ান্ত জুলাই জাতীয় সনদ। এতে, ৪৭টি বিষয়কে 'সংবিধান সংশোধন সাপেক্ষে সংস্কার' এবং বাকি ৩৭টি বিষয়ে অধ্যাদেশ বা 'নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সংস্কার' হিসেবে চিহ্নিত করে ঐকমত্য কমিশন।

জুলাই জাতীয় সনদের প্রথম ভাগে রয়েছে পটভূমি। দ্বিতীয় ভাগে ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব এবং তৃতীয় ভাগে আছে সনদ বাস্তবায়নের ৭ দফা অঙ্গীকারনামা। সনদের বেশকিছু বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হলেও কিছু বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি বিএনপি-জামায়াত-এনসিপিসহ অনেকে।

এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ দশ বছর মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন, এই প্রস্তাবে সব রাজনৈতিক দল একমত। এছাড়াও, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার, অর্থবিল ও আস্থা ভোট বাদে জাতীয় সংসদে দলের বিরুদ্ধে ভোট দেয়ার বিধান, সুপ্রিম কোর্ট বিকেন্দ্রীকরণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা, নির্বাচন কমিশন গঠনে স্বতন্ত্র কমিটি গঠন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে বিএনপি-জামায়াতসহ রাজনৈতিক দল ও জোট ঐকমত্যে পৌঁছেছে।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রী, দলীয় প্রধান বা সংসদ প্রধানের মতো একাধিক পদে থাকতে পারবেন না, এমন বিধানের পক্ষে ২৫টি রাজনৈতিক দল ঐকমত্যে পৌঁছালেও এ নিয়ে ভিন্নমত দিয়েছে বিএনপিসহ ৫টি রাজনৈতিক দল ও জোট। এছাড়া সংসদে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠন নিয়ে মতপার্থক্য রয়ে গেছে।

জুলাই জাতীয় সনদের সাত দফা অঙ্গীকারনামায় বলা হয়, এ সনদের বৈধতা ও প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কোনো আদালতে প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না। সনদ পূর্ণাঙ্গভাবে সংবিধানে তফসিল হিসেবে বা যথোপযুক্তভাবে সংযুক্ত করা হবে। আর অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য বিষয়গুলো দ্রুততম সময়েই বাস্তবায়ন করবে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে সনদ বাস্তবায়ন কিভাবে হবে সে বিষয়ে সনদে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।

এএইচ