বিবৃতিতে নেতারা বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান ছিল ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম। সহস্রাধিক মানুষের জীবন, হাজার হাজার মুক্তিকামী জনতার রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দীর্ঘ ১৬ বছরের স্বৈরশাসন থেকে দেশবাসী আজাদী লাভ করে। অথচ জাতিকে নতুন বাংলাদেশ উপহার দেয়া সেই ঐক্যবদ্ধ শক্তিকে ‘কালো শক্তি’ আখ্যায়িত করে প্রকারান্তর জুলাই অভ্যুত্থানকেই প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। আমরা তার এ ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
নেতারা আরও বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি— সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফজলুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী বয়ান প্রচার করে যাচ্ছেন। অভ্যুত্থানকে ‘অপশক্তির ষড়যন্ত্র’ বলেও ফ্রেমিং করছেন। এমনকি অভ্যুত্থানের নেতৃত্বকে ক্রমাগতভাবে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে তীব্র কটাক্ষ করে যাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, ফ্যাসিবাদের প্রতীক আওয়ামী মুজিববাদ ফিরিয়ে আনার প্রয়াসে নানা ভঙ্গিমায় তিনি মুজিব বন্দনাও করে যাচ্ছেন এবং অযাচিতভাবে মুক্তিযুদ্ধকে জুলাইয়ের মুখোমুখি দাঁড় করানোর ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু একটি দলের প্রধানের উপদেষ্টা পদে থেকে ধারাবাহিকভাবে এমন বক্তব্য দেওয়া হলেও তার বিরুদ্ধে দলীয় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, বরং তাকে প্রশ্রয় দেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
বিবৃতিতে ফজলুর রহমানের বক্তব্যে ফ্যাসিস্ট হাসিনার প্রতিচ্ছবি স্পষ্ট উল্লেখ করে বলা হয়, তিনি জুলাই যোদ্ধাদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে এবং অভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির মাধ্যমে আসলে জুলাই গণহত্যাকে বৈধতা দেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। এমতাবস্থায় জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে— আওয়ামীপ্রেমী ফজলুর রহমান গংদের লালন-পালনকারী দল রাষ্ট্রক্ষমতা পেলে জুলাই শহিদ ও যোদ্ধারাই কি উল্টো বিচারের মুখোমুখি হবেন?
নেতারা উদ্বেগ জানিয়ে বলেন, শহিদদের রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত সরকার ক্ষমতায় থাকলেও গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের মতো করেই জুলাই আন্দোলনকে নিয়ে কটূক্তিকারীদের প্রশ্রয় দেয়া হচ্ছে, যা জুলাইয়ের শহিদদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার সামিল। আমরা অবিলম্বে ফজলুর রহমানকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি প্রয়োগের জোর দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি দলীয়ভাবে তার কর্মকাণ্ড জবাবদিহিতার আওতায় এনে সর্বোচ্চ সাংগঠনিক শাস্তি আরোপ করতে বিএনপির নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় জুলাই অভ্যুত্থানের সংঘবদ্ধ শক্তিরা এর যথোপযুক্ত জবাব দিতে বাধ্য হবে।