ভাইয়ের মরদেহের সুরতহাল বাদ দিয়ে বুলেটে বিদীর্ণ বুক নিয়ে, কদমে কদমে কাঁটাতার, তাজা রক্ত, দমবন্ধ টিয়ারগ্যাস মাড়িয়ে গণভবনের কয়েক গজে যখন মুক্তিকামীরা, সূর্য তখন মগজে।
একসময়ের দোর্দণ্ড প্রতাপ আর ক্ষমতার ওপর জনরোষের তিরস্কার— পালালেন শেখ হাসিনা। আন্তর্জাতিক ও দেশিয় গণমাধ্যমে সেটি বড় অক্ষরে হলো প্রধান খবর।
বিদ্রোহ রূপ নিলো বিজয়ে। গণভবন, সংসদ ভবন, রাজপথে তখন লাখো মানুষের ঢল। টানা দেড় যুগে নির্যাতিতদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে মুহূর্তেই।
একদিকে বিজয় উল্লাস, ঠিক তার উল্টো পিঠে রাজধানীর দুই প্রবেশমুখ সাভার, আশুলিয়া ও যাত্রাবাড়ীতে চলে নৃশংসতা। সকাল থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত কয়েকজন নিহত হলেও বড় সহিংসতা ঘটে তারপর।
ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, যাত্রাবাড়ী থানার ভেতর থেকে গ্রেনেড সদৃশ কিছু নিক্ষেপ করা হয় ছাত্র-জনতার উপর, দিক-বিদিক ছোটাছুটির মধ্যে কিছু বুঝে উঠার আগেই প্রান হারান অর্ধশত মানুষ।
নিরস্ত্র অনেকেই আকুতি জানিয়েও শেষ রক্ষা পাননি। আধা ঘণ্টা পর গলি আর ফুটপাত পরিণত হয় তাজা মরদেহের স্তূপে। অন্যপ্রান্ত সাভার, আশুলিয়ায় রাত পর্যন্ত শুধু গুলিবর্ষণ আর হত্যা-ই হয়নি। ৬ জনের মরদেহ পুড়িয়ে দেয়ার মতো নৃশংসতার সাক্ষীও হয় দেশ।
এর আগে, কারফিউ ভাঙতে বিচ্ছিন্নভাবে হত্যাযজ্ঞ চলে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে। চানখারপুলের সকাল ছিল বেশি বিভৎস। নিকট দূরত্ব থেকে নগ্ন হামলা চলে সেখানে। এমন তাজা রক্ত, মগজ দিয়ে আজন্ম পঙ্গুত্ব বরণ করে নিয়ে ক্ষমতা মাড়িয়ে যে বিজয়, সেটিই তো জুলাই— ৩৬ জুলাই!