১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম। ডাকনাম ছিল ‘দুখু মিয়া’। শৈশব থেকেই কঠিন দারিদ্র্য মোকাবিলা করে বড় হয়েছেন তিনি। ১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ ভাদ্র ঢাকার বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (সাবেক পিজি হাসপাতাল) নিভে গিয়েছিল বাংলা সাহিত্য ও সংগীতের এ অনন্য প্রতিভার জীবনপ্রদীপ।
কবি কাজী নজরুল ইসলাম সৃষ্টিশীল ছিলেন মাত্র ২৩ বছর। নজরুলের এ ২৩ বছরের সাহিত্যজীবনের সৃষ্টিকর্ম বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ। কবি নজরুলের কবিতা, গান ও সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল। তার কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ-বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলেছে। অপর দিকে তিনি ছিলেন চিরপ্রেমের কবি। তিনি নিজেই বলেছেন ‘মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর হাতে রণ-তূর্য’।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ২৪ মে শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে ভারত সরকারের অনুমতি নিয়ে কবি নজরুলকে সপরিবার বাংলাদেশে আনা হয়। তাকে দেয়া হয় জাতীয় কবির মর্যাদা। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বসবাসের ব্যবস্থা করে রাজধানীর ধানমন্ডিতে কবিকে একটি বাড়ি দেওয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৪ সালে কবিকে সম্মানসূচক ডি-লিট উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ সরকার কবিকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয়। একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি একুশে পদকে ভূষিত করা হয় কবিকে।
আরও পড়ুন:
মৃত্যুবার্ষিকীতে কবির প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা জানাবেন দেশের মানুষ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান সকাল ৮টায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে শুরু করেছে মৃত্যুবার্ষিকীর কর্মসূচি। কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কবি নজরুল ইন্সটিটিউট দিনটি পালনে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী নজরুল’ শীর্ষক আলোচনা, হামদ-নাত ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে।
বাংলা অ্যাকাডেমি কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। আজ (বুধবার, ২৭ আগস্ট) বিকেল ৪টায় বাংলা অ্যাকাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ‘নজরুলের মৌলচেতনা অদ্বৈতবাদী সমন্বয়ের’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন নজরুল গবেষক অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক। এ সময় আলোচনায় অংশ নেবেন নজরুল গবেষক ড. সৈয়দা মোতাহেরা বানু এবং কবি ও প্রাবন্ধিক কাজী নাসির মামুন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বাংলা অ্যাকাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। স্বাগত বক্তৃতা দেবেন বাংলা অ্যাকাডেমির সচিব ড. মো. সেলিম রেজা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করবেন আবৃত্তি শিল্পী টিটো মুন্সী। নজরুলগীতি পরিবেশন করবেন শিল্পী ফেরদৌস আরা, শহিদ কবির পলাশ এবং তানভীর আলম সজীব।
এছাড়াও রাজধানীসহ দেশব্যাপী নানা আয়োজনে জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী পালন করবে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।