বাড়তি খরচে দুশ্চিন্তায় টাঙ্গাইলের কৃষকরা, প্রযুক্তির ব্যবহারের পরামর্শ

টাঙ্গাইল
কৃষি
এখন জনপদে
0

বছর ব্যবধানে ধানের চারা রোপণের খরচ বাড়ায় দুশ্চিন্তায় টাঙ্গাইলের কৃষক। বলছেন, বাধ্য হয়েই চাষাবাদ করলেও লাভের আশা নেই। এদিকে কৃষি কর্মকর্তার দাবি, ধান চাষে প্রযুক্তির ব্যবহার কমাতে পারে উৎপাদন খরচ।

টাঙ্গাইলের কালিহাতির সল্লা গ্রামের শাহাদত হোসেন ২০ বছর ধরে নিজের জমিতে ধান আবাদ করেন। আগে এ কাজে কৃষি শ্রমিক ব্যবহার করলেও, এবার খরচ কমাতে নিজেই করছেন সেই কাজ।

চলতি মৌসুমে ৭০ শতাংশ জমিতে বোরোর আবাদ করেছেন। গত বছর ১ বিঘা জমিতে চারা রোপণে খরচ হয়েছে ৫ হাজার ৭০০ টাকা, এবার তা বেড়ে হয়েছে ৭ হাজার ৫০০ টাকা হয়েছে বলে দাবি তার।

অতিরিক্ত সার, শ্রমিক ও চারার দাম বেড়ে যাওয়ায় বোরো আবাদের শুরুতেই উৎপাদন খরচ বেড়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ। সার ও জ্বালানি তেলের দাম কমানোর পাশাপাশি উৎপাদন খরচ কমানোর দাবি তার।

বোরো ধান চাষি শাহাদত হোসেন বলেন, ‘ধানের দাম তো বেশি না কিন্তু শ্রমিক, হাল, সার দাম সব বেশি। এজন্য তো আমাদের চলছে না। তাই নিজের কাজ নিজেকেই করতে হচ্ছে।’

শুধু শাহাদত হোসেন নয়, জেলার অন্যান্য কৃষকেরও একই অবস্থা। কৃষকদের দাবি, চালের দাম কিছুটা বাড়লেও ধানের দাম তেমন বাড়েনি। সরকার নির্ধারিত দামে সার না পাওয়ায় অনেকে ধান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন। কেউ কেউ নিষিদ্ধ তামাকসহ বিকল্প ফসলে ঝুঁকছেন।

শীতের সকালে মাঠে নেমে শ্রমিকরা দিনশেষে যে মজুরি পান, তাতে সংসার চালানোই কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে শ্রমিকরা।

কৃষি উৎপাদনে খরচ বাড়লে দেশ আরও বেশি আমদানি নির্ভর হয়ে পড়বে। এছাড়াও কৃষকরা অন্য ফসল চাষের দিকে অগ্রসর হবে বলে মন্তব্য করছেন অর্থনীতিবিদরা।

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগ অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদেকীন বলেন, ‘আমাদের গবাদিপশু বা বীজের এসব কাজেও কিন্তু আমরা বর্জ্য ব্যবহার করে থাকি। যেহেতু দাম বেড়েছে সেজন্য নন হিউম্যান কনজাম্পশন বা ভোগ বেড়ে যাবে যার প্রভাব আমাদের লাইভ স্টকেও পড়বে।’

এদিকে, কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, আধুনিক প্রযুক্তি ও সমলয় পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে খরচ কমবে। পাশাপাশি সার ডিলারদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত দাম নেয়ার অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তারা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার মোহাম্মদ দুলাল উদ্দিন বলেন, ‘এসআরডিআই ও আমাদের কৃষি অধিদপ্তর এবং অনলাইনভিত্তিক কিছু অ্যাপস করেছে সেগুলো যদি কৃষক ব্যবহার করে তাহলে ধানসহ অন্যান্য উৎপাদন খরচ কমে যাবে। সরকারি মূল্যের চেয়ে এক টাকাও বেশি মূল্যে বিক্রি করা সুযোগ নেই। কোনো জায়গা থেকে অভিযোগ পেলে আমরা সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলছি।’

চলতি মৌসুমে টাঙ্গাইলে প্রায় ১ লাখ ৭৬ হাজার ২শ' হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হবে।

এএম