টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ওয়ার্শি ইউনিয়নের নগরভাতগ্রামের রুবেল মিয়ার ছেলে তানবীর, পরিবারের সঙ্গে থাকতেন ঢাকার উত্তরায়। সেখানেই স্কুল, বাবা রুবেল মিয়ার ব্যবসা, ছোট ভাই তাশরীফের পড়ালেখা; সব মিলিয়ে সাজানো ছিল ছোট্ট একটা সংসার।
গতকাল (সোমবার, ২১ জুলাই) সকালে দুই ভাই একসঙ্গে স্কুলে যায়। ছোট ভাই তাশরীফ স্কুল ছুটি পেয়ে বাড়ি ফিরলেও বড় ভাই তানবীর তখনো ক্লাসে। আচমকাই ঘটে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান স্কুলের ওপর বিধ্বস্ত হয়। ছুটে যান স্বজনেরা, প্রথমে চিনতেই পারেননি কেউ তানবীরকে। পরে শনাক্ত হয় নিথর দেহ, নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকার বার্ন ইউনিটে। কিন্তু চিকিৎসকদের কোনো চেষ্টাই বাঁচাতে পারেনি তাকে।
রাতেই মরদেহ বাড়ির পথে রওনা হয়। সেই মরদেহ আজ পৌঁছেছে নগরভাতগ্রামে। বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে স্বজনদের কান্নায়। চাচাতো ভাই খাইরুল হাসান আর সজিব, দুই চোখের জল মুছতে মুছতে বললেন, ‘তানবীর খুব মেধাবী ছিল। সব সময় ক্লাসে প্রথম হতো। গ্রামের কারো কোনো প্রশ্ন থাকলে তানবীরকেই জিজ্ঞেস করত। তার এমন মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারছি না।’
তানবীরের বাবার স্বপ্ন ছিল ছেলে মানুষ হয়ে মানুষের উপকার করবে। মা লিপি বেগম সন্তানকে দিয়ে স্বপ্ন বুনতেন প্রতিদিন। সেই স্বপ্ন এক বিকেলের বিমান দুর্ঘটনায় ভেঙে গেল চিরতরে।
স্থানীয় ইউএনও এবিএম আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘এটি একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারটির পাশে থাকবো।’
তানবীরের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির শিশুবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নানা শ্রেণিপেশার মানুষ।