নারী দিবসে পাহাড়ের বুকে ব্যতিক্রমী আয়োজন

বান্দরবান
এখন জনপদে
0

আজ (শনিবার, ৮ মার্চ) আন্তর্জাতিক নারী দিবস। পাহাড়েও পালিত হয়েছে এই দিবসটি। তবে ব্যতিক্রমীই ভাবে নারী দিবস পালন করেছে বেসরকারি সংস্থা বলিপাড়া নারী কল্যাণ সমিতি (বিএনকেএস) ও ডিয়াকোনিয়া প্রতিষ্ঠানটি। দীর্ঘ বছর পর এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন করায় খুশি পাহাড়ের প্রতিটি নারীরা।

আজ থানচি বলীপাড়া ইউনিয়নের নাইংক্ষ্যং পাড়ার সাঙ্গু নদীর ঘাটে দিবসটি উপলক্ষ্যে পাহাড়ের নারীদের নৌকা বাইচ ও সাঁতার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট উবাথোয়াই মারমা। এছাড়াও থানচি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছির উদ্দিন মজুমদার, বিএনকেএস উপ নির্বাহী পরিচালক উবানু মারমাসহ নারী পুরুষ এই কর্মসূচিতে অংশ নেন।

এই দিবসটি উপলক্ষ্যে দুর্গম উপজেলা থানচি বলিপাড়া ইউনিয়নের নাইক্ষ্যং পাড়া গ্রামে নারীদের এমন ব্যতিক্রমী আয়োজনে উৎসব মুখরিত হয়ে উঠে সাঙ্গু নদী চর। আগমন ঘটেছে শতাধিক উৎসুক জনতা। পাহাড়িয়া নারীরা এই দিবসটিকে ঘিরে প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে।

এদিকে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতায় চারটি ও সাঁতার প্রতিযোগিতায় ২টি দল পাহাড়ে বসবাসরত শতাধিক নারীরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানে নিজেদের ঐতিহ্যবাহী নানা রঙের পোশাক পড়ে ব্যতিক্রমী এমন আয়োজনে উচ্ছ্বাসিত এলাকার মানুষ ও প্রতিযোগিরা। এই নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে নাইক্ষ্যং পাড়া দল ও সাঁতারে মাপ্রুচিং মারমা। পরে প্রতিযোগিতাদের পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা।

কিশোরীদের সাঁতার প্রতিযোগিতা প্রথম স্থান অর্জন করেছে মাপ্রুচিং মারমা। তিনি বলেন, 'নারী দিবসের “বিএনকেএস”র এমন মহৎ উদ্যোগের জন্য সাধুবাদ জানাই। আমি অনেক খুশি এবং প্রথম স্থান ও অর্জন করেছি।'

নৌকা বাইচের প্রথম স্থান অর্জনকারী নাইক্ষ্যং পাড়া দলনেতা মাউসাং মারমা বলেন, 'আমরা অনেক খুশী হয়েছি। প্রত্যেকদিন কাজের ব্যস্ত নিয়ে থাকি কিন্তু আজকের এমন প্রতিযোগিতায় খুব প্রশংসনীয়। এমন উদ্যোগ ভবিষ্যতে আরও আয়োজন করার আহ্বান রইলো।'

বান্দরবানের বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা 'বলিপাড়া নারী কল্যাণ সমিতি'(বিএনকেএস)’র উপ- নির্বাহী পরিচালক উবানু মারমা বলেন, 'দাতা সংস্থা ডিয়াকোনিয়া এর যৌথ আয়োজনে আমরা পাহাড়ের প্রত্যন্ত এলাকায় এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিযেছি। এর মাধ্যমে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও যে সমাজে প্রত্যেকটা কাজে সমান পারদর্শী সেটি তুলে ধরতে এমনটা ব্যতিক্রমী আয়োজন। আশা করছি সামনের দিনগুলোতে নারীদের নিয়ে আরো নানা কর্মসূচি নেয়া পরিকল্পনা রয়েছে।'

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য উবাথোয়াই মার্মা বলেন, 'নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা আমাদের ঐতিহ্যে। বহুদিন পর এ প্রতিযোগিতা হচ্ছে। এর মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া এ সংস্কৃতি আবার পুনরুদ্ধার হবে বলে আশা করছি। আর সব জায়গাতে নারীদের বিচরণ ছিল। কিন্তু পুরুষতান্ত্রিকতার কারণে তারা তাদের কাজের স্বীকৃতি পাইনি। তাই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নারীদের অধিকার ও স্বীকৃতি প্রতিফলন ঘটবে বলে এটাই প্রত্যাশা।'

এসএস