নেত্রকোণায় পুরুষ এগোলেও পিছিয়ে নারী, রয়েছে বেতন বৈষম্য

শ্রমজীবী মানুষ
দেশে এখন
এখন জনপদে
0

নেত্রকোণায় বড় কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান না থাকলেও শ্রমিকের বড় একটি অংশই কৃষি নির্ভরশীল। কাজের জন্য কখনো ভোর থেকে বসে থাকতে হয় সড়কে, কখনো বসে থেকেও মিলে না কাজ। এর মাঝে পুরুষের পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণ বাড়লেও এখনো পিছিয়ে নারী শ্রমিকরা। ইট ভাঙার শ্রমিক কিংবা গার্মেন্টস সকল ক্ষেত্রেই রয়েছে বেতন বৈষম্য।

ভোর হওয়ার সাথে সাথে নেত্রকোণার তেরি বাজারে ভিড় জমানো শ্রমিকরা। কৃষিজমি, মাটি কাটা কিংবা নির্মাণ কাজ সব কাজের শ্রমিকই পাওয়া যায় এই বাজারে। তাই যে যার প্রয়োজন মত দরদাম করে নিয়ে যান শ্রমিক।

দীর্ঘ ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে তেরি বাজারে কেনাবেচা হয় শ্রমিক। কাজের আশায় দূরদূরান্ত থেকে আসেন অনেকেই।

শ্রমিকদের একজন বলেন, ‘অনেক দুর থেকে আসি। আমাদের অনেক কাজের জন্য নেয়।’

আরেকজন বলেন, ‘এখানে সব ধরনের কাজের লোক পাওয়া যায়।’

তবে এ শ্রমিকদের কাজের কোন বয়স নেই। এই যেমন সাত বছর বয়সী প্রকাশ রবিদাস। যে বয়সে হাতে খাতা কলম থাকার কথা সেই বয়সে হাতে ধরেছে লোহার হাতুড়ি।

শিশু প্রকাশ রবিদাস বলেন, ‘এখানে ইট ভাঙার কাজ করি সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত।’

কেউ ৩০ বছর কেউ বা তারও বেশি সময় সময় ধরে ইট ভেঙে জীবিকার জোগান দিচ্ছেন যারা তাদের বেশিরভাগই নারী। এই কর্মে অনেকে হারিয়েছেন চোখ, অনেকে হয়েছেন গুরুতর আহত। যাদের জানা নেই শ্রমিক দিবস বা তার গুরুত্ব। শুধু জানেন কাজ করলেও মিলবে খাবার।

নারী শ্রমিকদের একজন বলেন, ‘দিবস নিয়ে আমরা কিছু পায় না। কাজ করলে খাবার খেতে পারবো।’

জেলার বিসিক শিল্প নগরীতে কাজ করেন প্রায় শতাধিক নারী। যেখানে কাজ করে মেলে জীবন জীবিকার খোরাক। যদিও পুরুষের সাথে সমানতালে কাজ করলেও বেতন মেলে অর্ধেক।

পোশাক শ্রমিকদের একজন বলেন, ‘আমরা যতদিন কাজ করি ততদিন আমাদের ভাত আছে। কাজ নেই কেউ আমাদের চালানোর মতো লোক নেই।’

নারীরা কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে আসলেও অধিকার আর বৈষম্যের কারণে অনেকটাই পিছিয়ে।

নারীদের কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে আনতে প্রতিষ্ঠানগুলোতে আলাদা ওয়াশ ব্লক, নিরাপত্তা, বেতনসহ সব দিকেই জোর দেয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছে জেলা প্রশাসন।

নেত্রকোণা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাফিকুজ্জামান বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে নারীদের বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। যার ফলে নারীরা কর্মক্ষেত্র তৈরি করতে পারছে ও উদ্যোক্তা হয়ে উঠছে।’

শ্রমিক দিবসটি শুধু মাত্র ক্যালেন্ডারের পাতায় সীমাবদ্ধ না রেখে শ্রমিকদের জীবন মান উন্নয়নে সংগঠনগুলো কাজ করবে এমন প্রত্যাশা খেটে খাওয়া শ্রমিকদের।

সেজু